দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এনার্জি ড্রিঙ্কের মতো শক্তিবর্ধক পানীয় খুব কম সময়ে ক্লান্তি কাটিয়ে দেবে ঠিক, তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। এই জাতীয় পানীয় বেশি খেলে হার্টের ক্ষতিও হতে পারে। কীভাবে, তা বুঝিয়ে বললেন গবেষকরা।
এনার্জি ড্রিঙ্ক, স্পোর্টস ড্রিঙ্কের মতো পানীয়গুলোর নাম এক সময় সাধারণ মানুষজনের চর্চাতেই ছিল না। মাঠে-ময়দানে নেমে যারা খেলাধুলা করেন, তারা এমন পানীয় খেয়েই অভ্যস্ত ছিলেন। তবে এখন শরীরচর্চা এবং ফিটনেস নিয়েও মানুষজন অনেক সচেতন। এনার্জি ড্রিঙ্ক এখন খুবই পরিচিত এক নাম। কেতাদুরস্ত জিম-পোশাক পরে হাতে এনার্জি ড্রিঙ্কের বোতল নিয়েই শরীরচর্চা করতে যান অনেকেই। বিশেষ করে কমবয়সিরা তো কথায় কথায় এনার্জি ড্রিঙ্ক কিনে খেয়ে ফেলছে। জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানোর পূর্বে শক্তি বাড়াতে এনার্জি ড্রিঙ্কের মতো শক্তিবর্ধক পানীয়ের উপরে বেশি ভরসা করেন তারা। তবে কথা হলো, এনার্জি ড্রিঙ্ক কী সত্যিই উপকারী? এর সঙ্গে আবার হৃদরোগের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, এনার্জি ড্রিঙ্ক বেশি খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে। বিশেষ করে এই পানীয় খেয়ে যদি কেও ভারি ব্যায়াম করতে যান কিংবা জিমে গিয়ে কার্ডিও করেন, তাহলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে।
গবেষকরা কেনো বলছেন?
এর কারণও রয়েছে অনেক। এনার্জি ড্রিঙ্কের প্রতি ক্যানে কম করে হলেও ১৫০-৩০০ মিলিগ্রাম ক্যাফিন থাকে। এই ক্যাফিন যদি প্রতিদিন শরীরে যেতে থাকে, তাহলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাব পড়ে। সেইসঙ্গে রক্ত সঞ্চালনেও সমস্যা হয়ে থাকে। এর জেরে হৃৎস্পন্দনের হারও বেড়ে যেতে পারে। অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন হার্ট অ্যাটাকের কারণও হয়ে উঠতে পারে।
এনার্জি ড্রিঙ্ক বেশি খেলে হজমশক্তি দুর্বল হবে, গ্যাস ও অ্যসিড রিফ্লাক্সের সমস্যাও বহু গুণে বেড়ে যাবে। স্থূলতা, দন্তক্ষয়, মাইগ্রেন, ডায়াবেটিসের সমস্যাও বাড়বে।
তাছাড়া ঘুমের সমস্যাও হয় এনার্জি ড্রিঙ্ক খেলে। এমনও দেখা গিয়েছে যে, দিনের পর দিন এনার্জি ড্রিঙ্ক খেয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বহু গুণে বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গেই অনিদ্রা কিংবা ইনসমনিয়ার সমস্যা দেখা দিয়েছে। আবার এনার্জি ড্রিঙ্কে ক্ষতি হয় কিডনিরও। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org