দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই বিষ পৃথিবীর সবচেয়ে দামি তরল পদার্থগুলোর মধ্যে একটি। এক লিটার বিষের দাম প্রায় ৮৫ কোটি টাকা। একটি হুল হতে মাত্র ২ মিলিলিটার বিষ পাওয়া যায়।

মাত্র কয়েক ফোঁটা বিষ। এই বিষ শরীরে প্রবেশ করলে শিশু কিংবা বৃদ্ধের প্রাণ নিয়ে যমে মানুষে টানাটানি শুরু হয়। আবার এই গরলই চিকিৎসা জগতেও অমৃততুল্য। কথায় রয়েছে, বিষে বিষে বিষক্ষয়। এই বিষ দিয়ে তৈরি হয় অ্যান্টিভেনম। অস্টিয়োআথ্রাইটিস, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম ও স্নায়ু এবং পেশি রোগের ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় মারাত্মক এই বিষটি। যে প্রাণীর হুল থেকে বিষ সংগ্রহ করা হয় সেটি আমাদের বুড়ো আঙুলের চেয়েও ছোট। বিষাক্ত সাপের পর অ্যারাকনিড গোত্রের এই প্রাণীটির বিষ মানুষের জন্য প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।
কাঁকড়াবিছে, নাম শুনলেই যেনো শিউরে ওঠার মতো অবস্থা হয়। এর বিষ পৃথিবীর সবচেয়ে দামি তরল পদার্থগুলোর মধ্যে একটি। এক লিটার বিষের দাম প্রায় ৮৫ কোটি টাকার মতো। একটি কাঁকড়াবিছের হুল হতে মাত্র ২ মিলিলিটার বিষ পাওয়া যায়। বিষ সংগ্রহ করা শ্রমসাধ্য ও বিপজ্জনক হওয়ায় বিষটি এতো মহার্ঘ। এক লিটার বিষ সংগ্রহ করতে লক্ষ লক্ষ কাঁক়ড়াবিছের হুল প্রয়োজন পড়ে। সেই হুল হতে বিষ সংগ্রহ করার কাজটি যথেষ্ট ঝুঁকির বিষয়। ইস্পাতকঠিন স্নায়ু না হলে এই কাজ করা এক কথায় অসম্ভব। সামান্য ভুলচুক হলেই সেই হুল ফুটতে পারে সংগ্রহকারীর শরীরে। কাঁকড়াবিছের হুল ফোটানোর জ্বালা একমাত্র ভুক্তভোগীরা জানেন।
মজার বিষয় হলো, বিষ সংগ্রহের এই লাভজনক ব্যবসার জন্য কোনও বিরল প্রজাতির কাঁকড়াবিছের প্রয়োজন পড়ে না। বর্ষাকালে বাড়ির অন্ধকার স্যাঁতসেঁতে জায়গায় বাস করা সাধারণ বিছেগুলোর বিষই প্রচুর টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org