দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার জিমেইলে সাইবার হামলার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্যক্তিগত কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক কাজে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সেবা নেওয়ার জন্য নিজের ই-মেইল ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধন করে থাকেন অনেকেই।

যে কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পণ্য এবং সেবার প্রচারণামূলক বার্তা ইনবক্সে জমা হওয়ায় প্রয়োজনের সময় গুরুত্বপূর্ণ ই-মেইল খুঁজে পেতে বেশ ঝামেলাও হয়। এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত অবাঞ্ছিত ই-মেইলের নিবন্ধন বাতিলের জন্য জিমেইল অ্যাপটিতে রয়েছে ‘আনসাবস্ক্রাইব’ বাটন। তবে এখন সেই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে নতুন ধরনের সাইবার হামলা করছে হ্যাকাররা।
সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের তথ্যমতে জানা যায়, জিমেইলের আনসাবস্ক্রাইব বাটনের আড়ালেই লুকিয়ে রাখা হচ্ছে ক্ষতিকর ওইসব সফটওয়্যার। যে কারণে ব্যবহারকারীরা বাটনটিতে ক্লিক করলে একটি ভুয়া ওয়েবসাইট চালু হয়। তারপর ওয়েবসাইটে থাকা কোনো অপশনে ক্লিক করলে স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটারে গোপনে প্রবেশ করে ভাইরাস কিংবা ম্যালওয়্যার। ক্ষতিকর ভাইরাস কিংবা ম্যালওয়্যারটি যন্ত্রে প্রবেশ করার পর ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে থাকে, এমনকি দূর হতে যন্ত্রটি নিয়ন্ত্রণও করতে পারে হ্যাকাররা!
জিমেইলে প্রচারণামূলক ই-মেইলগুলোতে সাধারণভাবে প্রেরকের নামের পাশে থাকা আনসাবস্ক্রাইব বাটনে ক্লিক করলেই একটি নতুন পেজ কিংবা পপ-আপ বক্স দেখা যায়। তাই ব্যবহারকারীদের বোকা বানাতে এই পপ-আপ বক্সের আদলে ভুয়া ই-মেইল পাঠিয়ে থাকে ওইসব হ্যাকাররা। যে কারণে বিভ্রান্ত হয়ে আনসাবস্ক্রাইব বাটনে ক্লিক করলে একটি ক্ষতিকর ওয়েবসাইট চালু হয়। তারপর ব্যবহারকারীদের অজান্তেই তাদের স্মার্টফোন এবং কম্পিউটারে ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে তখন তথ্য চুরি করতে থাকে।
এই বিষয়ে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, এই ধরনের প্রতারণা হতে নিরাপদ থাকতে হলে অপরিচিত প্রেরকের ই-মেইলে থাকা আনসাবস্ক্রাইব বাটনে ক্লিক করা হতে বিরত থাকতে হবে। শুধু তা-ই নয়, অপরিচিত ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের ই-মেইলের শিরোনামে যদি ‘অতি জরুরি’ কিংবা কোনো সতর্কবার্তা লেখা থাকে, সেইক্ষেত্রে সেটি না খোলাই ভালো। এ ছাড়াও যদি দেখা যায় যে, আনসাবস্ক্রাইব বাটনটি ই–মেইলের শুরুতেই প্রেরকের নামের পাশে নেই কিংবা একেবারে নিচের দিকেই রয়েছে, তবে সেটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনাই থাকবে বেশি। তথ্যসূত্র : নিউজ ১৮
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org