কোন খাবারগুলোর কারণে এলার্জিজনিত সমস্যা হতে পারে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খাবারের মাধ্যমে অ্যালার্জি একটি বিশ্বব্যাপী পরিচিত সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর প্রায় ৫-১০ শতাংশ মানুষ খাদ্যজনিত অ্যালার্জিতে ভোগেন।

মূলত আমাদের শরীর যখন কোনো নির্দিষ্ট খাবারকে ক্ষতিকর পদার্থ হিসেবে ভুলভাবে চিনে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখায়, তখন তাকে খাদ্য অ্যালার্জি বলা হয়। এর ফলে শরীরে চুলকানি, ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট, পেটব্যথা এমনকি মারাত্মক অ্যানাফাইল্যাক্সিসও হতে পারে। তাই কোন কোন খাবার অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে তা জানা জরুরি।

দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার অন্যতম অ্যালার্জিজনিত খাদ্য। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে গরুর দুধের প্রোটিনে অ্যালার্জি বেশি দেখা যায়। অনেকের ক্ষেত্রে দুধ খেলে হজমে সমস্যা, পেটব্যথা, ডায়রিয়া বা ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

Related Post

ডিম অ্যালার্জির একটি বড় উৎস। ডিমের সাদা অংশে থাকা প্রোটিন অনেক সময় শরীরে অ্যালার্জি তৈরি করে। এতে চুলকানি, হাঁচি-কাশি এবং ত্বকে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যদিও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক শিশু এই অ্যালার্জি থেকে মুক্ত হয়।

বাদাম অ্যালার্জির অন্যতম প্রধান কারণ। বিশেষ করে চিনাবাদাম এবং ট্রি নাটস (আখরোট, কাজু, কাঠবাদাম ইত্যাদি) খেলে অনেকের শ্বাসকষ্ট, গলা ফুলে যাওয়া এমনকি জীবনহানির ঝুঁকিও দেখা দিতে পারে। এটি সবচেয়ে গুরুতর খাদ্য অ্যালার্জিগুলোর মধ্যে একটি।

মাছ এবং সামুদ্রিক খাবার যেমন চিংড়ি, লবস্টার, কাঁকড়া অনেক মানুষের শরীরে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। এগুলো খাওয়ার পর শরীরে ফুসকুড়ি, চুলকানি বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে। সাধারণত এই ধরনের অ্যালার্জি সারাজীবন স্থায়ী হয়।

গম ও গ্লুটেনযুক্ত খাবারও অনেকের জন্য অ্যালার্জিজনিত সমস্যা তৈরি করে। গমে থাকা গ্লুটেন নামক প্রোটিনের কারণে সিলিয়াক ডিজিজ বা গ্লুটেন সেনসিটিভিটি হতে পারে। এতে পেটব্যথা, ডায়রিয়া, দুর্বলতা এবং চর্মরোগ দেখা দেয়।

সয়াবিন অনেকের শরীরে অ্যালার্জি সৃষ্টি করে। সয়াবিনজাত খাবার যেমন সয়া দুধ, সয়া সস বা সয়া প্রোটিন গ্রহণ করলে হজমের সমস্যা, ত্বকে ফুসকুড়ি কিংবা শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

এ ছাড়াও কিছু মানুষের ক্ষেত্রে টমেটো, স্ট্রবেরি, চকোলেট বা সংরক্ষণকারী রাসায়নিকযুক্ত খাবারও অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। যদিও এগুলো সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রভাব ফেলে না।

এক গবেষণায় বলা হয়, খাদ্য অ্যালার্জি প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো অ্যালার্জিজনিত খাবার চিহ্নিত করে তা এড়িয়ে চলা। এ ছাড়া খাবারের লেবেল ভালোভাবে পড়ে নেওয়া, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যালার্জি পরীক্ষা করা এবং জরুরি অবস্থার জন্য অ্যালার্জি ওষুধ সঙ্গে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

খাদ্য অ্যালার্জি উপেক্ষা করা উচিত নয়। কারণ সঠিক সতর্কতা না নিলে এটি মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই এলার্জিজনিত খাবার চিহ্নিত করে সচেতনভাবে খাদ্যাভ্যাস তৈরি করাই হলো সেরা করণীয়।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on অক্টোবর ২, ২০২৫ 9:45 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

View Comments

Recent Posts

দেশজুড়ে বাংলালিংকের ‘সেফটি অ্যান্ড ওয়েলনেস উইক ২০২৫’ উদ্বোধন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী অপারেটর বাংলালিংক গতকাল (শনিবার) ঢাকা, চট্টগ্রাম,…

% দিন আগে

দীপিকা ছেলের জন্য সুস্থ হয়ে উঠতে চান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতীয় অভিনেত্রী দীপিকা কক্কর যে কোনো মূল্যেই হোক না কেনো…

% দিন আগে

নাখোশ ইউরোপ: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে খুশি রাশিয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদিত নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে…

% দিন আগে

কানাডায় বরফের নিচে আয়োজন হলো পার্টি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডার কুইবেকে কিছু তরুণ বরফে জমে যাওয়া হ্রদের নিচে ডুব…

% দিন আগে

বরফে আচ্ছাদিত রাস্তা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

শীতে ঠোঁট ফাটা হতে রক্ষা পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…

% দিন আগে