ডায়াবেটিস রোগিদের কী কী খাওয়া যাবে সেটি জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডায়াবেটিস এমন একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যা মূলত রক্তে গ্লুকোজ কিংবা চিনির পরিমাণ বেড়ে গেলে দেখা দেয়। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হয় খাদ্যাভ্যাসে।

কারণ হলো, সঠিক খাবার নির্বাচনই পারে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও জটিলতা থেকে রক্ষা করতে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের খাবারের তালিকায় এমন উপাদান থাকাটা জরুরি, যা শরীরে ধীরে ধীরে গ্লুকোজ ছাড়ে ও পুষ্টি সরবরাহ করে।

প্রথমেই উল্লেখ করা প্রয়োজন, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার সবচেয়ে উপকারী। যেমন- লাল চাল, ওটস, ডাল, ছোলা, মসুর, শাকসবজি, এবং ফলমূল। এইসব খাবারে থাকা আঁশ রক্তে শর্করার পরিমাণ ধীরে বাড়ায়, ফলে ইনসুলিনের চাপ কমে যায়। বিশেষ করে পালংশাক, লাল শাক, ঢেঁড়স, লাউ, করলা ও করবী শাকের মতো সবজিগুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

Related Post

ফলমূলের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগীরা আপেল, পেয়ারা, জাম, কমলা, ড্রাগন ফল, পেঁপে ও স্ট্রবেরি খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত মিষ্টি ফল যেমন আম, কাঁঠাল, লিচু, আঙুর, কলা ইত্যাদি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। ফল খাওয়ার সময় খালি পেটে না খেয়ে খাবারের পর খেলে রক্তে গ্লুকোজের ভারসাম্য বজায় থাকে।

প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জরুরি। চর্বিহীন মাংস, মুরগির বুকের মাংস, মাছ, ডিমের সাদা অংশ এবং দুধজাত পণ্য (চিনি ছাড়া দই, স্কিম মিল্ক) শরীরের শক্তি জোগায় এবং রক্তে চিনির মাত্রা স্থিতিশীল রাখে।

এ ছাড়াও ভালো চর্বি বা হেলদি ফ্যাট যেমন জলপাই তেল, সরিষার তেল, বাদাম, আখরোট, এবং চিয়া বীজও অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। এসব খাবার হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অতিরিক্ত সুরক্ষা দেয়।

অপরদিকে যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে, সেগুলো হলো- চিনি, মিষ্টি, সফট ড্রিংকস, প্যাস্ট্রি, সাদা চাল, আলু, তেলে ভাজা খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য। এসব খাবার দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ বাড়ায় এবং ইনসুলিনের ভারসাম্য নষ্ট করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত সময়মতো খাবার খাওয়া, প্রচুর পানি পান, হালকা ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। সচেতন খাদ্যাভ্যাসই পারে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতে সাহায্য করতে।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on অক্টোবর ২৩, ২০২৫ 11:29 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

নাখোশ ইউরোপ: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে খুশি রাশিয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদিত নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে…

% দিন আগে

কানাডায় বরফের নিচে আয়োজন হলো পার্টি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডার কুইবেকে কিছু তরুণ বরফে জমে যাওয়া হ্রদের নিচে ডুব…

% দিন আগে

বরফে আচ্ছাদিত রাস্তা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

শীতে ঠোঁট ফাটা হতে রক্ষা পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…

% দিন আগে

নাসার রোভার মঙ্গল গ্রহে বজ্রপাতের সম্ভাব্য শব্দ ধারণ করলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত পারসিভিয়ারেন্স রোভার সম্প্রতি…

% দিন আগে

স্বাস্থ্য সচেতন হতে হলে আপনাকে অবশ্যই পেয়ারা খেতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য সচেতন জীবনের অন্যতম শর্ত হলো সঠিক খাবার বেছে নেওয়া।…

% দিন আগে