চট্টগ্রাম টেস্টের মতো ঢাকা টেস্টেও বাংলাদেশের বিপদের সময় জ্বলে উঠলেন মমিনুল, করলেন টানা দু ম্যাচে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি। ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে ১৫৫ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমেছিল বাংলাদেশ। ৫৫ রানের মধ্যে দুটি উইকেটের পতন ঘটায় শুরুটা ছিল হতাশার। এর পরই দলের হাল ধরেন মমিনুল। তামিম ইকবালের সাথে মমিনুলের তৃতীয় উইকেট জুটিতে রেকর্ড ১৫৭ রানের জুটিতে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া বাংলাদেশ পথের দিশা খুঁজে পায়। ১১৪ রানে এগিয়ে থেকে চতুর্থ দিন শেষ করে বাংলাদেশ।
২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে ম্যানচেষ্টার, লর্ডসে ব্যাক টু ব্যাক দুটি সেঞ্চুরি করে রেকর্ড গড়েছিলেন তামিম ইকবাল। সেই রেকর্ডে এবার ভাগ বসালেন মমিনুল। কাকতলীয়ভাবে মমিনুলের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সময় তাঁকে উপযুক্ত সঙ্গ দিয়েছেন তামিম নিজেই! তবে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা তামিম এবারও আউট হয়ে যান ৭০ রানে। তবে যাবার আগে দলকে শক্ত ভিত্তি গড়ে দেওয়ার পেছনে যথেষ্টই ভূমিকা রেখে যান তিনি।
দিনের শুরুটা বাংলাদেশের জন্য ভালোই ছিলো বলা যায়। মাত্র সাত ওভার বোলিং করে নিউজিল্যান্ডের শেষ দুই উইকেট তুলে নেয় স্বাগতিকরা। এরপর বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ১০ ওভার নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে দিলো। ১১তম ওভারে আক্রমণে এসে অফস্ট্যাম্পের বাইরের একটি বল কাট করতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এনামুল। নিউজিল্যাণ্ডকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন ওয়াগনার। দুই ওভার পরে বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেটটিও হারায় ওয়াগনারের আঘাতে। এবারও অফস্ট্যাম্পের বাইরের একটি বল ড্রাইভ করতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দেন মার্শাল আইয়ূব।
তবে এরপর দলের হাল ধরেন তামিম-মমিনুল। একটু একটু করে ইনিংস মেরামত করতে থাকেন দুজনে। দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৬৯ রান। ১২৬ রান নিয়ে ব্যাট করছেন মমিনুল। তাঁর সঙ্গে ৩২ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন সাকিব আল হাসান। তামিম ইকবাল ব্যক্তিগত ৭০ রানে উইলিয়ামসনের হাতে উইকেট খুইয়ে আসেন। তামিম আউট হওয়ার আগের ওভারে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট শতকটি পূর্ণ করেন মমিনুল।
সংবাদ সম্মেলনে মমিনুলের ইনিংসটি নিয়ে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় পিটার ফুলটন প্রশংসায় জানিয়েছেন, “সে অসাধারণ একটি ইনিংস খেলেছে। ওকে নিয়ে আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা ছিলো বিশেষ করে চট্টগ্রাম টেস্টের পর ওকে নিয়ে আমরা ভাবতে বাধ্য হই। অফস্টাম্পের বাইরে বল করে ওকে ঝামেলায় ফেলতে চেয়েছি। কিন্তু সে আজ খুবই ধৈর্যশীল ইনিংস খেলেছে। যখনই একটা বল খারাপ হয়েছে, সে শট খেলেছে। মাঝেমধ্যে এমন ইনিংসের প্রতি আপনার মাথা আপনা থেকেই নত হয়ে আসবে।”
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশঃ ২৮২ (তামিম ৯৫, মমিনুল ৪৭, মার্শাল ৪১; ওয়াগনার ৫/৬৪, সোধি ৩/৫৯) ও ২৬৯/৩ (তামিম ৭০, এনামুল ২২, মার্শাল ৯, মমিনুল ১২৬*, সাকিব ৩২*; ওয়াগনার ২/৫২, উইলিয়ামসন ১/৪৪)
নিউজিল্যান্ডঃ ৪৩৭ (ফুলটন ১৪, রাদারফোর্ড ১৩, উইলিয়ামসন ৬২, টেইলর ৫৩, ম্যাককালাম ১১, অ্যান্ডারসন ১১৬, ওয়াটলিং ৭০, ব্রেসওয়েল ১৭, ওয়াগনার ৮, সোধি ৫৮, বোল্ট ৪; সাকিব ৫/১০৩, রাজ্জাক ২/৯৬, নাসির ১/৭, আল-আমিন ১/৫৮)