দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিএনপি আজ শুক্রবার বেলা দুইটায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে। বিএনপির আবেদনের প্রেক্ষিতে শর্তসাপেক্ষে ঢাকা মহানগর পুলিশ এই অনুমতি দেয়।
গতকাল বেলা ১টায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার ও ডিএমপি কমিশনারের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম এক অনির্ধারিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, ‘১৮ দলের পক্ষ থেকে বিএনপির চিফ হুইফ জয়নাল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ডিএমপির কার্যালয়ে এসেছিল। তাঁরা শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে একটি আবেদন নিয়ে এসেছিলেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা নাগরিকদের নিরাপত্তা, জানমাল রক্ষা ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি।’
পরে গতকাল বিকেল পাঁচটা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার আনোয়ার হোসেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরাবর চিঠি দিয়ে সমাবেশের অনুমতির বিষয়টি জানান। ওই চিঠিতে বিকেল পাঁচটার মধ্যে সমাবেশ শেষ করা ও সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে থেকে লোক সমাগম করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, কোনো ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড, দা, কুড়াল, কাস্তে, বল্লম ও দেশীয় অস্ত্র ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। ডিএমপি’র চিঠিতে মোট ১৩ টি শর্তের কথা উল্লেখ রয়েছে।
শর্তগুলো হলো:-
(১) শুধুমাত্র সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে সমাবেশ অনুষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রম ও মাইক ব্যবহার সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
(২) সমাবেশ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করতে হবে।
(৩) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাহিরে বা সড়কে বা সড়কের পার্শ্বে মাইক/প্রজেকশন ব্যবহার করা যাবে না।
(৪) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাহিরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।
(৫) পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে মঞ্চ তৈরী করতে হবে এবং সমাবেশ অনুষ্ঠান ব্যতিত মঞ্চকে অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে না।
(৬) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অভ্যন্তরস্থ কোন স্থাপনা কিংবা বৃক্ষরাজির কোন ক্ষতি সাধন করা যাবে না।
(৭) সমাবেশ অনুষ্ঠান শুরুর ০২ (দুই) ঘন্টা পূর্বে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে এবং ১৭.০০ ঘটিকার মধ্যে শেষ করতে হবে।
(৮) অনুমোদিত সময়ের পূর্বে কিংবা পরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশসহ রাস্তায় কোন অবস্থাতেই সমবেত হওয়াসহ যান ও জন চলাচলে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে পরবর্তীতে কোন ধরণের অনুষ্ঠানে অনুমতি প্রদান করা হবে না।
(৯) সমাবেশ অনুষ্ঠান চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জনস্বার্থ, রাষ্ট্র ও জননিরাপত্তা বিরোধী কার্যকলাপ করা যাবে না।
(১০) কোন ধরণের ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড, দা, কুড়াল,কাস্তে, বল্লম ও দেশীয় অস্ত্র ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না।
(১১) মিছিলসহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না।
(১২) উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষনিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলিয়া গণ্য হবে।
(১৩) জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে উক্ত অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।
উল্লেখ্য, ২০ অক্টোবর থেকে ঢাকা মহানগর এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ডিএমপি। যে কারণে বিএনপি ২৫ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চ ও নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল।