হার্ট অ্যাটাকের হাত থেকে রক্ষা পেতে করণীয় কী জেনে নিন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে বিশ্বে হৃদরোগ বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ এবং শারীরিক অনিয়মই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে এই প্রাণঘাতী রোগের আশঙ্কা অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

নিয়মিত ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার অন্যতম উপায়। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটা রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যারা অফিসে দীর্ঘ সময় বসে কাজ করেন, তাদের উচিত প্রতি ঘণ্টায় কিছুক্ষণ হাঁটা বা স্ট্রেচিং করা।

Related Post

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা জরুরি। অতিরিক্ত তেল, লবণ, লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত খাবার (junk food) পরিহার করতে হবে। তার পরিবর্তে শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, বাদাম এবং আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। অলিভ অয়েল বা সরিষার তেল ব্যবহার হৃদযন্ত্রের জন্য তুলনামূলকভাবে ভালো। পাশাপাশি দিনে অন্তত আট গ্লাস পানি পান শরীরের বিষাক্ত উপাদান বের করতে সহায়তা করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরল বৃদ্ধির মাধ্যমে হার্টের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। তাই নিয়মিত ওজন পরীক্ষা এবং সুষম খাদ্যগ্রহণের অভ্যাস রাখতে হবে।

ধূমপান ও মদ্যপান

ধূমপান ও মদ্যপান সম্পূর্ণভাবে পরিহার করতে হবে। সিগারেটের নিকোটিন রক্তনালিকে সংকুচিত করে এবং রক্তের অক্সিজেন সরবরাহ কমিয়ে দেয়, ফলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। একইভাবে, অ্যালকোহলও হৃদযন্ত্রের পেশিকে দুর্বল করে তোলে।

মানসিক চাপ কমানো

মানসিক চাপ কমানো হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। দীর্ঘস্থায়ী দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগে শরীরে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মেডিটেশন, পর্যাপ্ত ঘুম এবং আনন্দদায়ক কর্মকাণ্ড মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ব্লাড সুগার এবং ইসিজি পরীক্ষা বছরে অন্তত একবার করা দরকার। এসব পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে হৃদরোগের ঝুঁকি শনাক্ত করা সম্ভব হয়।

যে কারণে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখা, সুষম খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং মানসিক প্রশান্তি ধরে রাখাই হার্ট অ্যাটাকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার মূল চাবিকাঠি। সময়মতো সচেতন হওয়া মানেই নিজের জীবনকে নিরাপদ রাখা।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on নভেম্বর ১০, ২০২৫ 1:02 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

View Comments

  • I have to say, this is some seriously impressive content! The amount of detail you included without making it overwhelming is a real skill. I especially appreciated the practical examples and templates you provided - those are going to save me so much time. It's clear you genuinely want to help your readers succeed, and that generosity of spirit really comes through in your writing. Thank you for creating and sharing this!

Recent Posts

তুরস্কে বিড়াল পেল নাগরিকত্বের স্বীকৃতি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় “তোমক” নামে এক জনপ্রিয় বিড়ালকে শহরের ‘সম্মানিত…

% দিন আগে

এক অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

শসার পুষ্টিগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শসা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্যতম পরিচিত এবং সহজলভ্য একটি সবজি।…

% দিন আগে

অ্যাপল ও গুগল সাইবার হামলার বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যাপল ও গুগল বিশ্বজুড়ে তাদের ব্যবহারকারীদের আবারও নতুন করে সাইবার…

% দিন আগে

টমেটোর গুণাগুণ জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সবচেয়ে পরিচিত ও সহজলভ্য একটি সবজি হলো…

% দিন আগে

শাহরুখ খান কাজল-টুইঙ্কেলের কাছে ক্ষমা চাইলেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের দুই অভিনেত্রী কাজল-টুইঙ্কেলের ‘টু মাচ উইথ কাজল অ্যান্ড টুইঙ্কেল’…

% দিন আগে