দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকদিন ধরেই আটকে ছিলো PayPal এর বিষয়টি। এটি চালু হয়ে গেলে বাংলাদেশের লক্ষাধিক ফ্রীল্যান্সারদের জন্য দেশের বাইরে থেকে আর্থিক লেনদেনে ব্যপারটি অনেক সহজ হয়ে যেতো, সরকার কথাও দিয়েছিলো তারা এই ব্যাপারটি গুরুত্বের সাথে দেখবে। কিন্তু PayPal নিজেই বেঁকে বসেছে এখন!
PayPal অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিষয়টি এখনও অনেক দূর্বল তাই এখনই এখানে তাদের ব্যবসার প্রসার করা ঝুঁকিপূর্ণ। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান এই অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন! তিনি জানিয়েছেন, “কোনো দূর্বলতার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়নি তারা বরং আমাদের জানানো হয়েছে যে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য আলাদা সফটওয়্যার করে তবেই আমাদের দেশে আসবে তারা।”
বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বেসিসের এতোগুলো নীতি সহায়তা দেবার পরেও আমাদের দেশে PayPal না আসাটা দুঃখজনক। ২০১৫ সালের মধ্যেই দেশে PayPal নিয়ে আসার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বেসিসের সভাপতি শামীম আহসান।
তিনি আরও জানান, “আমাদের দেশের ফ্রি ল্যান্সাররা গত বছর ৪ কোটি ডলার রাজস্ব আয় করেছে। এ ছাড়াও সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলো আয় করেছে আরো ১০ কোটি ডলার। এর বাইরেও আরো ৮ কোটি ডলার দেশে এসেছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে এ আয় ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। স্বল্প খরচে এবং স্বীকৃতভাবে আয়ের অর্থ দেশে আনতে PayPal বাংলাদেশে আনতে হবে।”
২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে PayPal আন্তর্জাতিক সদর দপ্তর থেকে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে যান। তারা ওই সময় বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠকও করেন। সে সময় আইনগত নানা দিক পর্যালোচনা করে যান। বাংলাদেশে অনলাইন পেমেন্টের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে একটি মতামত দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির সদর দপ্তর ক্যালিফোর্নিয়ায়। মূলত ওই প্রতিনিধি দলের মতামতের ভিত্তিতে PayPal সদর দপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছে না আসার।
এ মুহূর্তে বিশ্বের ১৯৩টি দেশে PayPal তাদের লেনদেনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্বের প্রায় ১৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ এ সেবার সুবিধা উপভোগ করছেন। ২৬টি মুদ্রায় এ প্রতিষ্ঠানটি লেনদেন পরিচালনা করে। কিন্তু এদেশে PayPal চালু না থাকায় এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত বাংলাদেশের ফ্রীল্যান্সাররা। এ মুহূর্তে দেশের ৫০ হাজার ফ্রি ল্যান্সার মাসে গড়ে প্রায় ৪০০ ডলার অবধি আয় করতে পারেন। কেউ কেউ মাসে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার ডলার আয় করতে পারে। কিন্তু বৈধভাবে ৫০০ ডলারের বেশি দেশে আনার সুযোগ নেই। এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে পারতো PayPal।
কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে PayPal বাংলাদেশে আসবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে। এ জন্য বৈদেশিক মুদ্রানীতি ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধানেও সংস্কার আনা হয়। কিন্তু তারপরও সংস্থাটি শেষ অবধি সফটওয়্যার সীমাবদ্ধতার কথা বলে আপাতত মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় হতাশ হতে হলো এদেশের ফ্রীল্যান্সারদের।
তথ্যসূত্রঃ BanglaNews24