দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন এখন জীবন-মৃত্যুর এক সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছেন। উন্নত চিকিৎসা সেবা নেওয়া তাঁরপক্ষে অসম্ভব ব্যাপার। কারণ তাঁর সে সামর্থ নেই। এতো বড় মাপের একজন সংগ্রামী যিনি আজীবন কাটিয়েছেন অভাব-অনটনে।
অনেকেই বিষয়টি শুনলে হয়তো আশ্চর্য না হয়ে পারবেন না। এতো বড় মাপের একজন সৈনিক ছিলেন তিনি। ক্ষমতা, অর্থ-কড়ির কি তাঁর অভাব থাকার কথা? কিন্তু তিনি তাই ছিলেন। সামান্য ভাড়া বাসায় আজীবন কানিয়েছেন। জীবনের বেশির ভাগ সময় তিনি কাটিয়েছে জিগাতলার ছোট্ট একটি বাসায়। পরবর্তী সময়ে কয়েক বছর হলো তিনি বাসা পরিবর্তন করে মোহাম্মদপুরে আসেন।
জীবনে কোনদিন ক্ষমতার মোহ তাঁর ছিল না। আর তাই অনেক মন্ত্রী-মিনিস্টারের প্রস্তাব নাকচ করেছেন। কাটিয়েছেন সাধারণ জীবন। দুই মেয়ের কাছে স্ত্রী মনিকাকে নিয়ে আছেন ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন। এমন একজন গুণি ব্যক্তি কেনো এমন সাধারণভাবে জীবন কাটালেন সে কাহিনী অনেক বড়। পরবর্তীতে আরও অনেক কাহিনী আপনাদের সামনে তুলে ধরা হবে।
বর্তমান অবস্থা হলো তিনি অসুস্থ্য হলে তাঁকে সিটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ব্যয় বহন করা তাঁর পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। পরে তাকে গতকাল পিজি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে চিকিৎসকরা তাঁকে অপারেশন করতেও ভয় পাচ্ছেন। আবার তাঁরপক্ষে চিকিৎসা ব্যয় বহন করাও দু:সাধ্য ব্যাপার।
তবে চিকিৎসার কোনো কমতি রাখেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তাঁর চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। নিউরোসার্জন বিভাগের প্রধান ডা. আব্দুল্লাহ’র তত্ত্বাবধানে মেডিকেল বোর্ড তাঁকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন।
বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলনে যিনি ভূমিকা রেখেছিলেন সেই ভাষা মতিন আজ মৃত্যুশয্যায়। তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ক্ষমতা ও লোভ লালসা যাঁকে কোনদিন কাবু করতে পারেনি সেই ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসুন- এটিই সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের কায়মনো বাক্যে প্রার্থনা।