দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হরতাল গণমানুষের অধিকারের হাতিয়ার। কিন্তু ইদানিং হরতাল ক্রমেই এক সহিংস বিধ্বসি রূপ নিয়েছে। যার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এমন ১৪ জন বর্তমানে হাসপাতালে তাদের দূর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছে।
সভ্য সমাজে যে ঘটনাগুলো কারো কাছেই কাম্য হতে পারে না সেরকম অনেক ঘটনায় আমাদের সকলের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। এখনকার হরতালে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তা সভ্য সমাজের জন্য লজ্জাজনক। কখনও বিশ্বজিতের মতো সাধারণ মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। আবার কখনও গাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে জীবন্ত দগ্ধ করা হচ্ছে। এমন ঘটনাকি কারো জন্যই কাম্য হতে পারে?
সমাজ এবং সমাজের নানা অসঙ্গতি থাকবে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু যখন সাধারণ মানুষকে এর শিকার হতে হয় তখন বলার ও করার কিছুই থাকেনা। জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্যই হরতাল-ধর্মঘট এটাই আমরা জানি। কিন্তু সেই হরতালে আবার সাধারণ জনগণকেই পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। কতিপয় ব্যক্তি হরতালের নামে মানুষের জীবন নিয়ে এভাবে খেলতে পারে না। হরতাল হবে সকলের সমর্থনে এটাই স্বাভাবিক। কারণ জনগণ ভোটের অধিকার জনগণ সব সময়ই সংরক্ষণ করবে। আর তাই তাদের অধিকার আদায়ে হরতাল কেনো প্রয়োজনে আরও অনেক কিছু করবে। তবে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার মতো কাজ একমাত্র কাপুরুষরাই করতে পারে।
হরতালে সহিংসতার শিকার হয়ে হাসপাতালে ১৪ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত দু’সপ্তাহে ককটেলে দগ্ধ হয়েছেন ৪৪ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন অন্তত দু’জন। তারা কেওই কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নন। রাস্তায় চলতে গিয়ে কিংবা গাড়িতে করে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্ত ও হরতালকারীদের ককটেল হামলার শিকার হয়েছেন তারা। নিম্ন আয়ের এসব মানুষ একদিন শ্রম না দিলে পরিবারের অন্ন জোটে না। এদের মধ্যে গাড়ির হেলপার, চালক, গার্মেন্ট শ্রমিক, দোকানের কর্মচারী রয়েছেন। আহতরা এখন হাসপাতালে তাদের নিকট স্বজনদের পাশে শুধুই ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন। কি দোষ ছিল ওদের। ওরা তো মিছিল মিটিং করতে বাসা থেকে রাস্তায় বের হয়নি। কোনো সভা-সমাবেশেও যোগ দিতে যায়নি। নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের পেটের ভাত জোগাতে কাজে বেরিয়েছিলেন। ৮৪ ঘণ্টার হরতাল শুরু হওয়ার আগের দিন শনিবার রাতে শাহবাগে হরতালকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়েছেন বাসযাত্রী মিঠু ও ধানমণ্ডিতে পিকআপ ভ্যানে দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়েছেন চালক সাবু আখতার। এদের এই দূর্গতির মাশুল দেবে কে? জাতির কাছে এ প্রশ্ন আজ বড় করে দেখা দিয়েছে।