দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বৃহস্পতিবার অবরোধের সময় অগ্নিদগ্ধ গাড়ির সেই ঘুমন্ত হেলপার ও আজ শুক্রবার সকালে আরেক ট্রাক চালকের মৃত্যু ঘটেছে। অপরদিকে এখনও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ অনেকেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
৩০ নভেম্বর অবরোধে ফরিপুরে অগ্নিদগ্ধ ট্রাক চালক মেহেদি হাসান আজ সকালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
গত ২ সপ্তাহের অবরোধে এ পর্যন্ত ৫০ এর বেশি নিহত ও বহু আহত হয়েছে। অবরোধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ মানুষ। জরুরি প্রয়োজনে জীবিকার তাগিদে এসব মানুষ ঘরের বাইরে আসছেন আর অবরোধের সহিংসতার শিকার হচ্ছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে আরও একজন দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তার নাম হাসান। বয়স মাত্র ১৬ বছর। সে বাসের হেলপার। রাজধানীর সায়েদাবাদে জনপথ মোড়ে পার্কিং করা ইশরাত পরিবহন নামের একটি বাসে গতকাল ঘুমিয়ে ছিলেন হাসান। সকাল ৯টার দিকে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল বোমা মেরে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে হাসানের সারা শরীর পুড়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। হাসানের শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে যায় ওই ঘটনায়। মুমূর্ষু অবস্থায় রাখা হয় আইসিসিইউ বিভাগে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। হাসান ওই বাসে আগের দিন বুধবার হেলপার হিসেবে যোগ দেন। জানা যায়, অবরোধের কারণে বাসটি এক সপ্তাহ ধরে জনপথ মোড়ে পার্কিং করা ছিল। আর ওই বাসেই ঘুমাচ্ছিলেন হাসান। কিন্তু ওই ঘুমই যে তার শেষ ঘুম হবে তা কেওই জানতো না। হাসানের মতো আর কত মানুষকে এভাবে প্রাণ দিতে হবে তা জানেনা আমাদের সমাজ, রাজনীতিবিদ কেওই।
এদিকে গতকালও দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতা ঘটেছে। আবার শনিবার থেকে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। অপরদিকে সরকার নির্বাচন করার জন্য সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে। এমন এক যুদ্ধাবস্থায় দেশের মানুষ দিশেহারা। কি হবে না হবে তা নিয়ে ঘুম নেই সাধারণ মানুষের। রাজধানীর সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বাস বন্ধ থাকলেও ট্রেনের ওপর ভরসা করে জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করা যেতো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ট্রেনে নাশকতার কারণে সে পথও বন্ধ। জনগণ এখনও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশায় রয়েছে। কবে সেই শান্তির সুবাতাস বইবে তা কেওই জানেনা।