দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ গতকাল বুধবার (২৩ অক্টোবর) ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য় পরিণত হয়। এর প্রভাবে ঢাকাসহ উপকূলীয় এলাকার আকাশ মেঘলাচ্ছন্ন রয়েছে। অনেক স্থানেই বৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে আঘাত হানতে পারে। এদিকে ‘দানা’র প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রও উত্তাল রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ পায়রা সমুদ্র বন্দর হতে ৪৭৫ কিমি দূরে অবস্থান করছে। এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উপকূলে দমকা কিংবা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারি থেকে অতিভারী বর্ষণও হতে পারে। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর- উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকাতে (১৮.৪° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.০° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় যে, এই ঘূর্ণিঝড়টি আজ (২৪ অক্টোবর) সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর হতে ৫৯৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর হতে ৫৫৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর হতে ৪৮৫ কি.মি. দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর হতে ৪৭৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস আরও জানায় যে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও এর অদূরবর্তী দ্বীপ এবং চরসমূহের উপর দিয়ে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারি (৪৪-৮৮ মি.মি.) হতে অতিভারি (≥ ৮৯ মি.মি.) বর্ষণ হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কি.মি., যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর ভিষণভাবে উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা এবং ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org