দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইতিহাসের কিংবদন্তি নেলসন ম্যান্ডেলার মহাপ্রয়াণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও একাত্মতা ঘোষণা করে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
পৃথিবীতে যুগে যুগে অনেকেই ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। তাঁদের কথা বিশ্ববাসী সব সময় স্মরণ করেন। কিন্তু সদ্য প্রয়াত নেলসন ম্যান্ডেলা তাঁদের থেকে একেবারেই ব্যতিক্রম। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক পর্যন্ত ম্যান্ডেলা মানবমুক্তির সত্যিকারের এক প্রেরণা।
তিনি চলে গেলেন কিন্তু বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে গেলেন যে, মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই। তিনি কল্পলোকের সত্যিকারের এক স্বপ্ননায়ক। আত্মত্যাগের মহান প্রতীক তিনি তার প্রমাণও করেছেন। তার রয়েছে দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় জীবনের এক ইতিহাস। শুধু যে ভক্তকুল তা নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আজ তাঁর জন্য চোখের পানি ফেলছেন। এমন এক মহান নেতার মহাপ্রয়াণকে যেনো কেওই মেনে নিতে পারছে না।
জাতিগত কত সমস্যা বিশ্বে বিদ্যমান। কিন্তু ম্যান্ডেলা কালো আফ্রিকার মুক্তির লাল সূর্য হয়ে উদীত হয়েছিলেন। আর তাই তাঁর গোত্রের দেয়া মাদিবা নামেই তিনি পরিচিতি লাভ করেন। পুরো নাম নেলসন রোলিহ্লাহ্লা ম্যান্ডেলা।
# জন্ম: ১৮ জুলাই ১৯১৮
# দক্ষিণ আফ্রিকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট (১৯৯৪ হতে ১৯৯৯)
# ১৯৬২ সালে তাঁকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকার কর্তৃক গ্রেফতার
# ১৯৮৮ সালে শাখারভ পুরস্কারের অভিষেক পুরস্কারটি যৌথভাবে অর্জন
# ম্যান্ডেলা ২৭ বছর কারাবাস। (অন্তর্ঘাতসহ নানা অপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়)
# ১৯৯০ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি কারামুক্ত
# ১৯৯৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার
# ১৯৯৪ সালে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়
# গত চার দশকে ম্যান্ডেলা ২৫০টিরও অধিক পুরস্কার
ম্যান্ডেলার বাংলাদেশে আগমন
বর্ণবাদ বিরোধী অবিসংবাদিত এই নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা বাংলাদেশে আসেন ১৯৯৭ সালে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ২৫ বছর পুর্তি অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দেন আরেক নেতা ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে। ২৬ মার্চ ১৯৯৭, স্বাধীন বাংলাদেশের রজতজয়ন্তী দিবস। ওই দিন ঢাকায় আসেন কিংবদন্তীর রাজনীতিবিদ নেলসন ম্যান্ডেলা। একই অনুষ্ঠানে
যোগদানের জন্য ঢাকায় আসেন তখনকার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাত ও তুরস্কের রাষ্ট্রপ্রধান সুলেমান ডেমিরেল। স্বাধীনতার রজতজয়ন্তীতে তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত শিখা চিরন্তন উদ্বোধন করেন এইসব বিশ্ব নেতারা। কিংবদন্তী এই নেতার স্মরণে বাংলাদেশে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। শনি, রবি ও সোমবার সরকারি, বেসরকারি ও সায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী দূতাবাস সমূহেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। এই বিশ্ব নেতার স্মরণে শোকবই খোলা সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে এই ৩ দিন।