দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পুঁই শাক সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের আগ্রহ বাড়ছে। তাদের মতে গৃহস্থালি ওষধী উদ্ভিদ হিসেবে পুঁই শাকের কোনো তুলনা নেই।
পুঁই শাকে ভিটামিন এ ও বি এবং প্রোটিন ক্যালশিয়াম এবং আইরণের অভাব দূর করে। শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগলে পুঁই শাক দিয়ে খিচুড়ি রেধে নিয়মিত খাওয়ালে অপুষ্টি কেটে যায়। শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিলেও পুঁই শাক খুবই কার্যকরি একটি পথ্য হতে পারে।
প্রাচীন বিশেষজ্ঞরা দুর্বল শরীরকে সবল করতে পাকা পুঁই শাকের বীজের বেগুনি রস খেতে বলতেন। পুঁই শাকের রস ব্যবহার করেছেন ঘা সারাতে। পুঁই পাতার সঙ্গে চার ভাগের এক ভাগ খাঁটি সরিষার তেল মিশিয়ে জ্বাল দিতে হয়। জ্বাল দেওয়ার পর পানি শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা করে বোতলে ভরে রাখতে হয়। তারপর খোস-পাচড়া কিন্বা শরীরের কোন স্থানে ঘা হলে ওই ওষুধ লাগালে ভালো হয়ে যায়। ওষুধটি ঘরে বানিয়ে রাখা যায়।
শরীরে শীতপিত্ত দেখা দিলে কিন্বা আমবাত বেরুলেও পুঁই শাকের রস ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হতে পারে। পুঁই শাকের ডাটা টুকরো টুকরো করে কেটে শুকাতে হয় প্রথমে। তারপর অল্প আগুনে সেই পুঁই কাটা শুকাতে হয়। শুকনো পুঁই ডাটা ও নারেকেলের তেল মিশিয়ে খোস-পাচড়ায় মাখালে তা ভালো হয়ে যায়।
আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, পুঁই শাকের রস মন স্নিগ্ধ করে। এই কারণে প্রাচীন ভেষজ শাস্ত্রে অতিরিক্ত মদ খাওয়ার পর মদের দোষ সারাতে বার্লির সঙ্গে রান্না করে পুঁই শাক খাওয়ার উপদেশ দেওয়া হতো। এতেই বোঝা যায় পুঁই শাক কতখানি উপকারে আসে। পুঁই শাক গণরিয়া ও লিঙ্গ প্রদাহের খুবই উপকারী। পুঁই শাকের রস নিয়মিত খেলে শরীরের মূলতন্ত্র শক্তিশালী হয়। কোন কারণে প্রসাব নিয়মিত না হলে পুঁই শাক খেলে অনেক সময় সমস্যা কেটে যায়।
পুঁই শাক একটি দাঁতের মাজও বটে। পুঁই পাতা ও ডাটা পুড়িয়ে ছাই করে দাঁত মাজলে দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়। এছাড়াও পায়োরিয়া থাকলে ভালো হয়ে যায়।
এই পুঁই শাক আমাদের দেশে প্রায় সারা বছর সবখানে পাওয়া যায়। এই উপকারী তরকারী পুঁই শাক বেশি বেশি খেয়ে আমাদের নানা রোগ ব্যধি থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। তাই আসুন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পুঁই শাককে প্রাধান্য দেই। সুস্থ-সুন্দর জীবন গড়ি।