ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সামপ্রতিক সময়ে জলদস্যুদের উৎপাতে সুন্দরবন এলাকার জেলে থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এদিকে এই জলদস্যুদের দমনের জন্য শীঘ্রই শুরু হচ্ছে সাঁড়াশি অভিযান।
জানা গেছে, সুন্দরবনের জলদস্যু ও বনদস্যু দমনে শিগগির সাঁড়াশি অভিযান শুরু হচ্ছে। চলতি ইলিশ মৌসুমে জেলেরা যাতে নির্বিঘ্নে মাছ ধরতে পারে সেজন্য আইনশৃংখলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। জলদস্যুতা দমনে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্ব্বয় এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সমন্বিত অভিযান পরিচালিত হবে। বৃদ্ধি করা হবে গোয়েন্দা নজরদারি। স্থাপন করা হবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ওয়ারলেস। তার পাশাপাশি সুন্দরবনে কাঠ, মধু ও গোলপাতা সংগ্রহ মৌসুমে বনদস্যুতা দমনে নেয়া হয়েছে নানা কর্মপরিকল্পনা। এ লক্ষ্যে র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমানকে প্রধান সমন্বয়কারী করে জাতীয় পর্যায়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে আরও সদস্য রয়েছেন এনএসআই’র মহাপরিচালক, কোস্টগার্ড মহাপরিচালক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক-৪, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি ও প্রধান বন সংরক্ষক। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপকূলীয় জেলায় জলদস্যু দমনের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব শেখ মোঃ ওয়াহিদ উজ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১, র্যাবের মহাপরিচালক, কোস্টগার্ড মহাপরিচালক, নৌবাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি ও উপকূলীয় ২০ জেলার ডিসি ও এসপিরা উপস্থিত ছিলেন। খবর একটি দৈনিকের।
জানা যায়, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ মাছ ধরার মৌসুম। বর্তমানে উপকূলীয় এলাকায় ১ হাজার ৮টি ট্রলার ধরার কাজে নিয়োজিত আছে। বিভিন্ন বাহিনীর নামে মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে প্রতি ট্রলার হতে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। চাঁদা না দিলে জেলেরা ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে যেতে পারে না। ট্রলারসহ জেলেদের আটক করে ২-৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটছে। এজন্য লেনদেনের স্থান হিসেবে খুলনা, মংলা, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন অঞ্চল বেছে নেয়া হচ্ছে। আটকের স্থান হিসেবে শরণখোলার নারিকেলবাড়িয়া, গঙ্গামতি (দুবলা), ডুবোজাহাজ, হিরণপয়েন্টের পশ্চিমপাড়, গলাচিপার সোনারচর, রূপারচর ইত্যাদি বেছে নেয়া হচ্ছে। জেলেরা মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হলে হত্যা করা হয়। একইসঙ্গে সুন্দরবনের মধু, কাঠ, গোলপাতা সংগ্রহকারীরাও নিয়মিত চাঁদার শিকার হয়ে আসছে। জলদস্যু বাহিনীর মধ্যে বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে রাজু বাহিনী, আব্বাস বাহিনী, মোতালেব বাহিনী, কৃঞ্চসাগর বাহিনী, মাস্টার বাহিনী, নাসির বাহিনী প্রমুখ। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে সমন্বিত উদ্যোগে শীঘ্রই এসব এলাকায় অভিযান চালাবে আইনশৃংখলা বাহিনী।
উল্লেখ্য, ‘ওদের সঙ্গে পেরে উঠছে না আইন প্রয়োগকারী সংস্থা! সুন্দরবন উপকূল ও চরাঞ্চলে জলদস্যুরা বেপরোয়া’ ২৯ জুন ঢাকা টাইমস্-এ এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ওই রিপোর্টে বলা হয়, সুন্দরবন এলাকায় জলদস্যুদের উৎপাতে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। এই জলদস্যুরা জেলেদের অপহরণ ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের সঙ্গে পেরে উঠছে না।