দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের এক মুসলিম পরিবারের ছেলে আদেশ, বর্তমানে তিনি কানাডার উঠতি নারী মডেল! কি ঘাবড়ে গেলেন? হ্যাঁ আদেশ নিজেকে ধীরে ধীরে নারীতে পরিণত করেছে এবং খুব শীগ্রই তিনি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতা মিস ইউনিভার্সে অংশ নেবেন।
আদেশের বর্তমান নাম এমেলিয়া ম্যালটেপে, তিনি সম্প্রতি নিজের ব্রেস্ট অপারেশন করিয়েছেন, একই সাথে শরীরের পুরুষালী সকল লোমও ঝরিয়ে ফেলেছেন অপারেশনের মাধ্যমে। কিছুদিনের মাঝেই এমেলিয়া ম্যালটেপে তার লিঙ্গ পরিবর্তনের জটিল অপারেশন করাতে যাচ্ছেন। তবে এখন তাকে দেখতে সম্পূর্ণ আবেদনময়ী নারীই মনে হয় যে কারোর।
এমেলিয়ার বিষয়ে বিশ্ব মিডিয়া বেশ সরব, জনপ্রিয় অনলাইন মিডিয়া সমূহ এমেলিয়াকে নিয়ে প্রতিবেদনও করেছে। এমেলিয়া বিভিন্ন মিডিয়াকে বলেন, “আমার ভেতরে নারীত্ব রয়েছে তা আমি ছোট থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম, আমি সব সময় ভাবতাম আমার সাথে সমাজের অন্যান্য ছেলেদের মিল নেই, আমার নিজের গঠন ও ছেলের চেয়ে মেয়ের সাথে মিলে, আমার মানসিক অবস্থাও নারীর মতই ছিল। আমি মায়ের শাড়ি পরতাম, মায়ের গহনা এবং প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করতাম। এক সময় আমার পরিবার আমার নারী সুলভ ব্যবহার বুঝতে পারে তাঁরা প্রাথমিক ভাবে কষ্ট পেলেও পরে তাঁরা বিষয়টি মেনে নেয়। আমি বিদেশে এসে পড়া শুনা করতে চাইলে আমার পরিবার তাতে না করেনি তাঁরা আমাকে কানাডায় পাঠায় পড়াশোনা করতে, এখানে এসে আমি জানতে পারি লিঙ্গ পরিবর্তন সম্ভব তখন থেকেই আমার ইচ্ছে জাগে আমি আমার ভেতরে যা আছে তাকে বাস্তব রূপ দেব।
এদিকে এমেলিয়ার লিঙ্গ পরিবর্তন সহ সব কাজে যে তাকে সার্বক্ষণিক সাহায্য করছে সে হচ্ছে চালস দাবাক, সে এমেলিয়ার বয় ফেন্ড, যদিও চালস আগে জানতোনা এমেলিয়া বাস্তবিক পক্ষে একজন ছেলে, যখন চালস বিষয়টি জানতে পারে সে কিছুটা অসস্থিতে পড়লেও এখন তার মাঝে কোন জড়তা নেই, চালস বলেন, যেহেতু এমেলিয়া নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করছে সেহেতু আমার কোন সমস্যা নেই।
চলাস আরও বলেন, আমি এমেলিয়াকে আমার পরিবারের সাথেও পরিচয় করিয়ে দিয়েছি আমার পরিবার এমেলিয়াকে স্বাভাবিক হিসেবেই নিয়েছে তাঁরা খুব খুশী।
এমেলিয়া ২০০৯ সালে পড়ালেখা করতে কানাডা যান সেখানে যাওয়ার পর তিনি নিজেকে নারীর সাজে সাজিয়ে বাড়ির বাইরে বের হতেন। বর্তমানে এমেলিয়া নিজের বেশ কিছু অপারেশন করিয়েছেন এখন অপেক্ষা পূর্ণ নারীত্ব অর্থাৎ লিঙ্গ পরিবর্তনের অপারেশনের।
এমেলিয়া মিডিয়াকে বলেন, আমার স্বপ্ন আমি মিস ইউনিভার্স হব, আমার এই কাজে আমাকে সাহায্য করছে কানাডার মডেল জেনা তারাকভা, জেনা বলেন এমেলিয়া চাইলেই পারবে কারন এমেলিয়া অন্যান্য অনেক নারীর থেকেই এগিয়ে আছে।
এদিকে এমেলিয়া এরই মাঝে বিভিন্ন ফ্যাশন প্রতিযোগিতায় নিজেকে প্রমান করেছেন, তিনি টরেন্টোর এক ফোটোশুটে কানাডার নামকরা মডেলদের সাথে প্রতিযোগিতা করে বিজয়ী হয়েছেন।
এমেলিয়া নিজের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তার পরিবারের মনোভাবের বিষয়ে জানান, আমার পরিবার আমার খুব আপন, তবে বাংলাদেশে এসব বিষয় স্বাভাবিক ভাবে কেউ নিতে চাইবেন না একই সাথে আমি একজন নারী হিসেবে যদি তাদের সামনে উপস্থিত হই তবে তাদের বিষয়টি মেনে নিতে অনেক কষ্ট হবে। কিন্তু আমি জানি তাঁরা আমায় অনেক ভালোবাসেন, আমার ভেতরের নারীত্বকে তাঁরা সম্মান দেখাবেন।
এমেলিয়া ২০০৯ সালে কেনাডা গমন করে এখন তিনি সে দেশে বিজনেস স্টাডিজ বিষয়ে পড়ছেন। পুরুষ হিসেবে কানাডা গেলেও এমেলিয়াকে দেখে এখন অনেকেই হয়ত বুঝবেন না তিনি আসলে একজন পুরুষ ছিলেন।
সূত্রঃ Huffingtonpost