দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যার কোন কিছু নেই তার আল্লাহ্ আছেন। এমন কথা সবাই বলে থাকেন। কথাটি সত্যিও তাই। শেরপুরের নালিতাবাড়ীর এক বৃদ্ধের কোন উপায়ন্তর নেই। আছে শুধু একটি ঘোড়া। শেষতক এই ঘোড়ায় তার একমাত্র অবলম্বন হয়েছে।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা একটি নিরিবিলি এলাকা। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় বসতিও অনেক কম এই এলাকায়। আর এই এলাকায় যারা বসবাস করেন তাদের বেশির ভাগই গারো বা বিভিন্ন উপজাতি গোষ্ঠির লোকজন। রাস্তাঘাটও তেমন একটা উন্নত নয়। এই উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়নের উল্লারপাড় গ্রামের বৃদ্ধ শহর আলী মীর ওরফে সইট্টা ফকির (৮৫), একদিন শখের বসেই তিনি স্থানীয় মাথাফাটা বাজার গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বিনা সুদে ৬ হাজার টাকা লোন নিয়ে ছোট্ট একটি ঘোড়া কিনেন। এই ঘোড়ায় এখন তার একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম হয়েছে।
সইট্টা ফকির ভিক্ষা করেন ঘোড়ায় চড়ে। বয়সের ভারে নুব্জ সইট্টা ফকির আগের মতো চলতে-ফিরতে পারেন না। দু’-এক টাকা ভিক্ষায় বৃদ্ধা স্ত্রীকে নিয়ে চলতেও পারেন না। সংসারের ঘানি টানতে হিমশিম খেতে হয়। আর তাই বাস্তবে ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করেন সইট্রা ফকির। এতে রোজগারও এখন ভালো। সইট্রা ফকির এখন দু-এক টাকা ভিক্ষা নেয় না, কমপক্ষ ৫ টাকা। ঘোড়া আর সংসার মিলে ভালোই আছেন শখের এ মানুষটি। ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করে যা পান তা দিয়ে চলে যাচ্ছে তার সংসার। অনেকেই তাকে সৌখিন ভিক্ষুক বলে ডাকেন। ভিক্ষাও দেন প্রায় সবাই। ঘোড়াকে সম্বল করেই বাকি জীবনের সমাপ্তি ঘটাতে চান আলী মীর ওরফে সইট্টা ফকির। এই এলাকায় এখন তিনি ব্যাপকভাবে পরিচিত। অনেকেই রসিকতা করে বলেন, আলী মীর ওরফে সইট্টা ফকির যদি ইউনিয়নে মেম্বারে দাঁড়ান তাহলে তিনি মেম্বার হয়ে যাবেন। কিন্তু সইট্টা ফকির অবশ্য বলেছেন, এমন বড় কিছু হওয়ার দুরাশা তার নেই। নির্বাচন করতে গেলেও তো টাকা-পয়সা লাগে। তা তিনি কোথায় পাবেন। তাই তিনি বাকি জীবনটা এভাবেই পার করতে চান। এটাই তার একমাত্র জীবন ও জীবিকা।