দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সিলেটের জাফলং এ বাঁধ খুঁড়ে পাথর লুটের পরিকল্পনা করছে কতিপয় একটি চক্র। যে কারণে পর্যটনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে এই জাফলং তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।
সংবাদ মাধ্যম সূত্র বলেছে, সিলেটের জাফলং এ আদিবাসী পল্লি রক্ষায় পিয়াইন নদীর তীরে প্রায় দুই যুগ আগে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকে সংস্কার না হওয়ায় ২০১২ সালে আদিবাসীরা নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি পুনর্র্নিমাণ করেছিলেন। তবে এক সপ্তাহ ধরে বাঁধ এলাকায় খননযন্ত্র দিয়ে বড় বড় গর্ত করে পাথর উত্তোলন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়, গোয়াইনঘাটের পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের সংগ্রামপুঞ্জিতে খাসি আদিবাসী ও বাঙালি পরিবার বসবাস করেন। ১৯৮৮ সালের বন্যায় আদিবাসী খাসি সম্প্রদায়-অধ্যুষিত সংগ্রামপুঞ্জির এক-তৃতীয়াংশ এলাকা পিয়াইন নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তদারকিতে এক কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। তবে নির্মাণের পর আর সংস্কার না হওয়ায় এলাকাবাসী এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েন। এমন অবস্থায় ২০১২ সালের বর্ষার আগে আদিবাসীরা নিজ উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধটি পুনর্র্নিমাণ করেন।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বন্যার পর খণ্ডকালীন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই পাউবো বিদেশি অর্থায়নে বাঁধটি নির্মাণ করেছিল। খণ্ডকালীন হওয়ায় পরবর্তী সময়ে এই বাঁধের আর সংস্কার করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
ওই সংগ্রামপুঞ্জির বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, জাফলংয়ে পিয়াইন নদীর পাথর উত্তোলনে যন্ত্র ব্যবহার করায় প্রতিবছর পাহাড়ি ঢলের তোড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অবস্থা নড়বড়ে যাচ্ছে। এবার শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই বাঁধের সেই অংশসহ পিয়াইন নদীতীরের প্রায় এক কিলোমিটার অংশে পাথর উত্তোলনের জন্য বড় বড় গর্তও করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তারা নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে গত বছর বাঁধের পুনর্নিমাণ করেন। কিন্তু বর্তমানে পাথর উত্তোলনের জন্য বড় বড় গর্ত করায় আবারও হুমকির মুখে পড়েছে বাঁধটি। এলাকাবাসী মনে করে শুধু এলাকাটির অস্থিত্বই নয়, এটি অত্র এলাকার পর্যটন শিল্পের ওপরও একটি আঘাত। এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।