দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে যে আলোচনা ও সমালোচনা বইছিলো তার পুরোটাই ছিল বিরোধী দল তথা বিএনপি বা ১৮ দলের পক্ষে। কিন্তু নির্বাচনোত্তর এখন হাওয়া বইছে সরকারের পালে।
যেসব টক শোতে যে সব ব্যক্তি এতোদিন সরকারের সমালোচনা করেছেন তারাই এখন আবার বলছেন উল্টো কথা। অনেকেই এখন বলছেন, বিএনপির আন্দোলন ফ্লপ হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। কেও বলছেন, জামায়াতকে ছেড়ে এসে আন্দোলন করলে জনগণের সম্পৃক্তরা হতো। সেক্ষেত্রে আন্দোলন সফল হতো। আবার কেও বলছেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হলে জনসমর্থন থাকতো।
এমন হাজারো কথা শোনা যাচ্ছে এখন। নির্বাচনের আগে যারা বলতেন, এই নির্বাচন টিকবে না। এখন তারা সুর পাল্টে বলছেন, এখন সরকার যেভাবে বসেছেন তাতে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকাও অস্বাভাবিক নয়।
আবার সরকার গঠনের আগে বিদেশীরা যেভাবে সরকারকে চাপ দিচ্ছিলেন তাতে মনে হলো নির্বাচন হওয়ার পর তারা বোধহয় এই সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো ঘটছে তার উল্টো। এখন রাশিয়া, চীন এমনটি আমেরিকাও এই সরকারের সঙ্গে আছে বলে জানিয়েছে। অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। যদিও বিদেশীরা এখনও বলছেন, আলোচনার মাধ্যমে সকল দলের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনে যেতে হবে যত শীঘ্রই সম্ভব। তবে বিদেশীরা এখন পরিষ্কার হয়েছেন, যা ঘটুক সরকারের ইচ্ছায় ঘটবে। শুধু চাপ প্রয়োগ করে কোন লাভ হবে না।
ইইউ অর্থাৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্রগুলো নির্বাচনের আগে যেমন মনোভাব দেখিয়েছিলেন এখন তারা বিএনপিকে জামায়াত-হেফাজতের মতো জঙ্গি সংগঠনকে ছেড়ে আসার পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দিচ্ছেন সরকারকে। এমন মনোভাব কিন্তু নির্বাচনের আগে ছিল না।
পাকিস্তান কাদের মোল্লার রায় কার্যকরের পর পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব করে যে প্রস্তাব পাস করেছিল এখন নির্বাচনের পর তাদের সুরও পাল্টে গেছে। এখন তারা জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধির কাছে বলেছেন, বাংলাদেশের আভ্যান্তরিণ বিচার ব্যবস্থা নিয়ে তারা আর কোন কথা বলবেন না।
আবার আন্তর্জাতি মিডিয়াও গত দু’মাসে যে ভূমিকা রেখেছিল এখন দেখা যাচ্ছে তার উল্টো। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, আন্তর্জাতিক মিডিয়াও এখন বর্তমান সরকারকে সমর্থন করছেন।
নির্বাচনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতি দেখে অনেক কিছুই মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে দেশী বিদেশী সকল পক্ষই সরকারের পক্ষে চলে যাচ্ছে। এমন এক পরিস্থিতিতে বিরোধী দল বিএনপিও তাদের মনোভাব কিছুটা পরিবর্তন করছেন বোঝা যাচ্ছে। বিএনপি এখন হরতার-অবরোধ থেকেই সরে এসেছে। বিএনপি বুঝেছে এই মুহূর্তে হরতাল-অবরোধ করলে জনসমর্থন হারাতে হবে। তাই কৌশলগতভাবেই হরতাল-অবরোধ ব্যতিরেকে অন্যান্য কর্মসূচি দিচ্ছে বিএনপি।
দেশের মানুষও হরতাল-অবরোধকে ঘৃণা করে। তবে মানুষ সেই সঙ্গে একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষপাতি। যে নির্বাচনে সকল দল অংশগ্রহণ করতে পারবে। দেশে আবার শান্তি ফিরে আসবে এমন প্রত্যাশা দেশের ষোল কোটি মানুষের।