দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চিনি(শর্করা) যদি প্রাণীদেহে শক্তি উৎপাদন করতে পারে, তবে কেন ব্যাটারির শক্তি উৎপাদনে শর্করা ব্যবহার করা যাবে না? এই ভাবনা থেকে ভার্জিনিয়া টেকের গবেষকরা নতুন এক প্রকার বায়ো ব্যাটারি নির্মাণের চেষ্টা করছেন যা প্রচলিত লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির তুলনায় ১০ গুণ বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে পারবে।
আজব প্রশ্ন হলেও বিষয়টা কিন্তু মোটেও আজব নয়। বাজারে প্রচলিত ব্যাটারিগুলোর নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। এই ধরণের ব্যাটারিরগুলোর প্রধানতম সমস্যা হচ্ছে, ব্যাটারিগুলো কোন ভাবেই পরিবেশ বান্ধব নয়। ব্যবহার ফুরিয়ে গেলে তা রাসায়নিক আবর্জনার পরিমাণ বাড়ায়। স্মার্ট ফোন, ট্যাবলয়েড, ল্যাপটপ প্রভৃতি ইলেক্ট্রনিক্স পন্য গুলোতে রিচার্জেবল ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। একটা সময় ব্যাটারিগুলো কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। এই ব্যাটারিগুলো পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয়।
গবেষকরা এমন এক ব্যাটারি নির্মাণ করছেন যা শর্করা থেকে শক্তি উৎপাদন করতে পারবে। মূলত তারা এক প্রকার বায়োফুয়েল বা জৈব্য জ্বালানী তৈরি করছেন যার প্রধান উপকরণ হচ্ছে ইয়েস্ট সেল বা খামির এবং চিনি বা শর্করা। জৈবজ্বালানী সাধারণত সাম্প্রতিক কালে মৃত জৈবিক পদার্থ, মূলত গাছপালা, থেকে উৎপাদিত কঠিন, তরল, অথবা গ্যাসীয় জ্বালানীকে বোঝানো হয়। এটি জীবাশ্ম-জ্বালানীর থেকে আলাদা এই কারণে যে জীবাশ্ম-জ্বালানীর উৎপত্তি হয় সুদীর্ঘকাল আগে মৃত জৈবিক পদার্থ থেকে। শর্করা শক্তি প্রদত্ত ব্যাটারিগুলো দীর্ঘক্ষণ চলবে পুনরায় জ্বালানী সরবরাহ করার আগ পর্যন্ত।
এই জৈব্য ব্যাটারির পেছনে কাজ করছেন ওয়াই. এইচ. পারসিভাল চাঙ এবং জিগোয়াঙ চু। মূলত তাদের মাথা থেকেই আসে জৈব শর্করা ব্যবহার করে ব্যাটারি তৈরি করার ধারণা।
বায়োলজিক্যাল সিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারিং এর সহযোগি অধ্যাপক ওয়াই. এইচ. পারসিভাল চাঙ এর বিবৃতি অনুসারে, শর্করা হচ্ছে যথার্থ প্রাকৃতিক শক্তির আধার। তাই এই আধারকে ব্যবহার করে পরিবেশ বান্ধব উপায়ে ব্যাটারি উৎপাদন করা যুক্তি যুক্ত হবে।
ভার্জিনিয়া টেক মনে করে, গবেষকদের উদ্ভাবিত নতুন মডেলের ব্যাটারি সস্তা হবে। ব্যায়বহুল প্লাটিনাম ব্যবহার করতে হবে না বলে এটার সবার কাছে সাশ্রয়ী করা সম্ভব হবে। আশা করা যায়, এই ধরণের জৈব্য ব্যাটারি খুব শিঘ্রই প্রধান প্রধান ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রগুলোতে ব্যবহার করা যাবে। ততদিন আমাদের গবেষকদের সফলতার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
তথ্যসূত্র: দি টেক জার্নাল, সিনেট