দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান দেখে সুড়ঙ্গ কাটার কৌশল রপ্ত করেছেন বলে রিমাণ্ডে বলেছেন কিশোরগঞ্জে সোনালী ব্যাংকের টাকা লুটকারী মূলহোতা সোহেল।
কিশোরগঞ্জের সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে টাকা চুরির ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ইউসুফ মুন্সী ওরফে হাবিব ওরফে সোহেল ৭ দিনের রিমাণ্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে তদন্ত কর্মকর্তারা। তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম তথ্য দিচ্ছে সোহেল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে এর সঙ্গে কে বা কারা কারা জড়িত সেই বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছে, ছদ্মবেশই ছিল তার কৌশল। প্রেম, বিয়ে, ব্যাংক লুট ও আত্মগোপন সব কিছুতেই ছিল নিজেকে আড়াল করার নানা প্রবণতা। সন্ত্রাসীরা সাধারণ ছদ্মবেশ বেশি নিয়ে থাকে। যে কারণে তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করছে আর কোন কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সে জড়িত ছিল। ছদ্মবেশ আর যত ছলচাতুরিই করুক তাকে এক সময় ধরা পড়তেই হয়। সোহেলের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। কথিত দুই প্রেমিকার তথ্যে গোয়েন্দাদের জালে ধরা পড়ে সোহেল। উদ্ধার করা হয় লুণ্ঠিত প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকা। অথচ গ্রেফতারের সময়ও সে র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে সুকৌশলে এড়িয়ে যায় তার ও নিজ সহোদর ভাই ইদ্রিছের প্রকৃত পরিচয়। তবে শেষ পর্যন্ত আর নিজেকে আড়াল করতে পারেনি এই বহুরূপী খলনায়ক ইউসুফ মুন্সী ওরফে হাবিব ওরফে সোহেল। বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জে নিয়ে আসার পর থেকে একের পর এক তদন্ত সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসতে থাকে সুড়ঙ্গপথে কিশোরগঞ্জের সোনালী ব্যাংক লুটের মূল হোতা সোহেলের পেছনের অন্ধকার জীবনের সব চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীদের ধারণা আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তার কাছে পাওয়া যেতে পারে।
স্বীকারোক্তির ভিডিও দেখুন
http://www.youtube.com/watch?v=nXrmE0g8DpE
পুলিশের একটি সূত্র সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, সোহেলের একার পক্ষে সুড়ঙ্গ তৈরি করা কঠিন। কারণ সুড়ঙ্গ করতে প্রচুর বাঁশ, কাঠ, হাতুড়িসহ বিভিন্ন প্রকার নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এতে কোনো সংঘবদ্ধ শক্তিশালী চক্র জড়িত থাকতে পারে বলে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে সোহেল জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে বলেছে, সুড়ঙ্গ তৈরিতে খননকৃত মাটির কিছু অংশ তাঁর বাসার একটি কক্ষে এবং বাকি মাটি দুটি ঠেলাগাড়িতে করে পার্শ্ববর্তী নরসুন্দা নদীতে ফেলে দিয়েছে। তার বক্তব্য সঠিক কিনা পুলিশ এসব বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখছে।
অপরদিকে পুলিশের ধারণা, টাকাগুলোর ওজন ছিল ২৪০ কেজি। টাকাগুলো বস্তায় ভরে সোহেলের একার পক্ষে রিকশায় করে ট্রাকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব কি না, তাও জানার চেষ্টা চলছে। অপরদিকে, রাজধানী ঢাকার শ্যামপুরের যে বাসা থেকে সোহেল ও তাঁর সহযোগীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, সেই বাসার মালিক ব্যবসায়ী নূরুল হুদাকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জে এনে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।