দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাতক্ষীরার সংখ্যালধুদের আতংক এখনও কাটেনি। ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরা সফর করে আক্রান্তদের সরকারি সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও আতংক তাদের তাড়া করে ফিরছে প্রতিনিয়ত। অনেক হিন্দু সমপ্রদায় ভারতে পাড়ি জমাচ্ছেন এমন খবর এসেছে সংবাদ মাধ্যমে।
যৌথ বাহিনী মাঠে রয়েছে। বিরোধী দলের কোন কর্মসূচিও বর্তমানে নেই। সার্বিকভাবে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিত তবুও অজানা এক আতঙ্কে দিন কাটছে সাতক্ষীরাবাসীর। ঘর থাকতেও ঘরে ফিরতে সাহস পাচ্ছেন না অনেক হিন্দু সমপ্রদায়ের লোকদের। এমনকি স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও আতংকের মধ্যে রয়েছেন।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন জেলায় জামায়াত-শিবির একটি মূর্তিমান আতংক হিসাবে পরিচিত হওয়া মূলত এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ওই অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের মধ্যে আতংক ঢুকিয়ে দিয়েছে সংগঠনটি। যৌথ বাহিনীর অভিযান শেষ হলে কি অবস্থার সৃষ্টি হয় তা নিয়েও রয়েছে তাদের মধ্যে আতংক। ভবিষ্যতে আবার তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না সে গ্যারান্টি কি কেও দিতে পারেন? বিশেষ করে এমন অজানা আতংকে দিন কাটছে সাতক্ষীরার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে।
সম্প্রতি সাতক্ষীরার বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনার মাধ্যমে যে আতংক সৃষ্টি হয়েছিল তা বন্ধ হলেও রেশ কাটেনি এখনও। রাস্তা কাটা, গাছ কাটা, রাস্তায় পেরেক পোতা, সড়কে বেড়িবাঁধ নির্মাণ, ঘরবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া, ভাংচুর, ককটেল ও বোমা ফাটানো, পিটিয়ে এমনকি জবাই বা গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এমন বীভৎস আক্রমণের কথা মনে হলে এখনও এলাকাবাসী শিউড়ে ওঠেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার জামায়াতের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত আগরদাড়ি ইউনিয়নে জামায়াত-শিবিরের ভয়ে সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের অনেক মানুষ ইতিমধ্যে প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। দেশের অবস্থা স্বাভাবিক না হাওয়া পর্যন্ত তারা হয়তো দেশে ফিরবেন না। এছাড়া অনেক সংখ্যালঘু পরিবার জামায়াত-শিবিরের ভয়ে জমিজমা বিক্রি করে ভারতে যাবার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে যারা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলে গেছেন, তারা রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ না হলে হয়তো ফিরবেন না, বা অনেকেই আর ফিরতেও চান না।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ জানুয়ারি সাতক্ষীরা সফরে এসে সহিংস ঘটনায় হতাহত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রেণিভেদে ২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী ১৬ জন নিহত, ৫৫ জন আহত ও ৮৩ জন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে এই অর্থ প্রদান করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব পরিবারের ঘরবাড়ি নির্মাণ করা হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন।