দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার সোয়েটার আর টুপি বানানো হয়েছে চুল দিয়ে। আর এ কর্মটি করেছেন চীনের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা।
চুল নিয়ে কতনা চুলোচুলি হতে দেখা যায়। কিন্তু চুল দিয়ে আবার কোন পরিধানের জিনিস বানানো যাবে তা কিন্তু কেওই ভাবতে পারেনি। কিন্তু এবার তাই ঘটালেন চীনের এক মহিলা। তিনি দীর্ঘদিন এই চুল জমিয়ে যাচ্ছেন। তার একটাই উদ্দেশ্যে ছিল এই ফেলে দেওয়া চুল দিয়েই এমন একটা কিছু করতে চান। এমন একটি কর্ম যিনি করেছেন তার নাম জিয়াং রেনজিয়ান। আজকের কথা নয়, এখন তিনি বৃদ্ধ। কিন্তু সেই তরুণী বয়স থেকে নিজের ঝরে পড়া চুল জমিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
চীনের চংকুইং প্রদেশের অধিবাসী জিয়াং রেনজিয়ান বলেন, ‘যখন তরুণী ছিলাম, তখন নিজের চুল দেখে নিজেই মুগ্ধ হতাম। কী সুন্দর লম্বা লম্বা চুল! আঁচড়ানোর পর দেখতাম বেশ কিছু চুল জমে গেছে। সেগুলো ফেলে দিতে ইচ্ছে করত না আমার। যে কারণে আমি জমিয়ে রাখতে শুরু করলাম। জমাতে জমাতে একসময় মনে হল, এই চুল দিয়ে কিছু একটা বানিয়ে উপহার দেব আমার স্বামীকে। ঠিক তাই করলাম।’
চীনের এই মহিলা জিয়াং রেনিজয়ান পেশায় ছিলেন স্কুল শিক্ষক। এখন তার বয়স ৬০। যখন তার বয়স ছিল ৪৯ বছর ছিল তখন স্বামীকে নিজের চুল দিয়ে বানানো কিছু একটা উপহার দেয়ার কথা মনে হয়েছিল। ততদিনে তার কাছে জমেও গেছে অনেক চুল।
স্বামীর সঙ্গে জিয়াং রেনিজয়ান
ওই চুল দিয়ে শুরু করলেন সোয়েটার বানানো। সময় লাগলো দীর্ঘ এগার বছর। এই দীর্ঘ সময় ধরে বানিয়েছেন একটা সোয়েটার আর একটা টুপি। সোয়েটারের ওজন হয়েছে ৩৮২.৩ গ্রাম। টুপির ওজন ১১৯.৫ গ্রাম। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করা ভালবাসার মানুষটির এই অভিনব উপহার পেয়ে সত্যিই মুগ্ধ তার স্বামী। কিন্তু তবুও পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন জিয়াং। কেননা চুল দিয়েই স্বপ্নের জাল বুনে চলেছেন তিনি দীর্ঘদিন ধরে। এখন তিনি সেই কালো সোয়েটারে সাদা অক্ষরে ফুটিয়ে তুলতে চান নিজের নামটি। সে কারণে নিজের সাদা চুল জমাতে শুরু করেছেন চিনের অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষিকা জিয়াং রেনজিয়ান।
সোজা মনে হলেও চুলকে বোনার উপযোগী উলে পরিণত করাও কম পরিশ্রমের কাজ ছিল না। এই সোয়েটার বোনার একটা উল তৈরি করতে লেগেছে ১৫ টুকরো চুল। ২০টি চুলের টুকরো দিয়ে তৈরি হয়েছে টুপি বোনার একটা উল।
উল্লেখ্য, ২০০৩ থেকে শুরু করেন বোনার কাজ। জীবনসঙ্গীকে খুশি করতে কঠোর এই পরিশ্রম হাসিমুখেই করেন তিনি। শুধু একটু ধৈর্য ও ইচ্ছা শক্তি থাকতে হবে। ইচ্ছে থাকলে সব কিছুই করা সম্ভব সেটিই প্রমাণ করেছেন চীনের এই মহিলা জিয়াং রেনিজয়ান। তিনি আমাদের সভ্য সমাজের কাছে একটি উদাহরণ।
তথ্যসূত্র: http://www.lidtime.com