দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অপরাধীরা কখনও বাঁচতে পারে না। দীর্ঘদিন পর হলেও সে কথাই প্রমাণিত হয়েছে। স্মরণকালের গার্মেন্টস অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার মূল নায়ক তাজরিন ফ্যাশনের মালিক ও তার স্ত্রীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
এতো বিশাল আগুনের ঘটনা ঘটলেও এই প্রতিষ্ঠানের মালিক এতোদিন ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই ছিলেন। কারণ মালিক হিসেবে তিনি তার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। মালিক হিসেবে এতো মানুষের যেখানে করুণভাবে মৃত্যু হয়েছে তার দায় এড়িয়ে বহাল তবিয়তে ছিলেন তাজরীন ফ্যাশনসের মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন। আদালত দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মাহমুদা আক্তারের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন। আজ রোববার সকালে ঢাকার বিচারিক হাকিম তাজুল ইসলামের আদালতে তাঁরা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন। পরে শুনানি শেষে বিচারক ওই আদেশ দেন।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় তাজরীন ফ্যাশনসে এক ভয়াবহ আগুন লাগে। এতে অন্তত ১১১ জন নিহত ও দুই শতাধিক শ্রমিক আহত হয়। ঘটনার পরদিন আশুলিয়া থানার পুলিশ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কারখানায় অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে একটি মামলা করে। ঘটনার কয়েক দিন পর রেহানা নামে নিখোঁজ এক শ্রমিকের ভাই আবদুল মতিন ঢাকার নিম্ন আদালতে দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে একটি নালিশি মামলা করেন। তখন আদালত আশুলিয়া থানাকে এই মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। ঘটনার এক বছর ৮ দিনের মাথায় গত বছর ২২ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটির মালিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। এই অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত হত্যা, নরহত্যা, অগ্নিসংযোগ করে সম্পদের ক্ষতি সাধনের অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন- তাজরীন গার্মেন্টস-এর এমডি দেলোয়ার হোসেন, তাঁর স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার, প্রকৌশলী এম মাহাবুবুল মোর্শেদ, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার আবদুর রাজ্জাক, প্রোডাকশন ম্যানেজার মোবারক হোসেন ওরফে মঞ্জু, কোয়ালিটি ম্যানেজার শহীদুজ্জামান ওরফে দুলাল, দুলাল উদ্দিন, হামিদুল ইসলাম, আল আমীন, মো. আল আমীন, আনারুল, শামীম মিয়া ও আনিসুর রহমান। শেষোক্ত ৬ জনের মধ্যে ৫ জন জামিনে ও একজন কারাগারে আছেন।