দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের বিতর্কিত ‘গুন্ডে’ ছবিটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করলে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এজন্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যশরাজ ফিল্মস দুঃখ প্রকাশ করলেও ছবিটি বন্ধ ও কাঁটছাট করার প্রস্তাবও নাকচ করে দিয়েছে!
বলিউডের হিন্দি ছবি ‘গুন্ডে’-তে যেভাবে ১৯৭১-র যুদ্ধকে বর্ণনা করা হয়েছে, তার জন্য বাংলাদেশে ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে ছবিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান যশরাজ ফিল্মস দুঃখ প্রকাশ করলেও ছবিটির প্রদর্শন বাতিল করার বা তাতে কোন পরিবর্তন আনার কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। মুম্বাই থেকে যশরাজ ফিল্মস কর্তৃপক্ষ বিবিসিকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
সংস্থার একজন মুখপাত্র জানান, ক্ষমা চাওয়ার বাইরে তাদের আর আপাতত যোগ করার মতো কিছু নেই। ভারত ও বিদেশের হাজার হাজার সিনেমা হলে ছবিটি বর্তমানে চলছে, ফলে তার প্রদর্শন বাতিল করা বা ছবির প্রিন্টে এখন কোনো রদবদল করা যে অসম্ভব সেটাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি।
অবশ্য ভারতের চিত্র পরিচালকরা কেও কেও যেমন বলছেন, এই ছবিতে সত্যিই ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে, তেমনি ইতিহাসবিদদের অনেকেই আবার মনে করছেন, একটা সামান্য ব্যাপারে বাংলাদেশ একটু বেশিই প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
ভারতের প্রথম সারির একজন চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর মতে, ‘সিনেমায় এ ধরনের বেহিসেবি মন্তব্য করে গুন্ডে-র নির্মাতারা চরম দায়িত্ব-জ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।’ ভারতীয় সেন্সর বোর্ড কীভাবে ছবিটির সার্টিফিকেট দিল, তা নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত।
বর্ষীয়ান এই চিত্র পরিচালক আরও বলছিলেন, ‘ছবি আপনি যে কোনও বিষয় নিয়েই বানাতে পারেন, সেই স্বাধীনতা সবারই রয়েছে। কিন্তু ইতিহাসকে বিকৃত করার স্বাধীনতা আপনার নেই, আর যখন সেই ইতিহাস খুব দূরেরও নয়।’
মি. দাশগুপ্ত নামে অপর একজন বলেছেন, ‘যারাই ছবিটি বানিয়ে থাকুন, তারা চরম অশিক্ষিত বলতেই হবে। বিন্দুমাত্র ইতিহাস জ্ঞান নেই তাদের, অথচ এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে ছবি বানিয়েছেন -বাংলাদেশে প্রতিবাদ হওয়াটাই তো স্বাভাবিক।
উল্লেখ্য, গুন্ডে ছবির ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে হিন্দুস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে তৃতীয় যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ৯০ হাজার পাকিস্তানি সেনা ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড় মাপের আত্মসমর্পণ আর হয়নি। তার পরই জন্ম হয় নতুন এক দেশের বাংলাদেশ যার নাম।