দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভ্রমণের শখ কার নেই? সবাই চান নগর জীবন থেকে একটু ছুটি নিয়ে বিভিন্ন যায়গায় ঘুরে বেড়াতে। আপনিও পারেন ছুটিতে বেড়াতে যেতে দেশের মধ্যেই পছন্দের কোনো জায়গায়। অনেকেই নিজের উদ্যোগে বেড়াতে যেতে পছন্দ করলেও আবার অনেকেই ঝক্কি ঝামেলায় যেতে চান না। আমাদের আজকের প্রতিবেদনে উঠে আসবে বিডি বাস লাভার গ্রুপের সাগর কন্যা কুয়াকাটায় আনন্দ ভ্রমণের বিষয়ে বিস্তারিত এবং ঢাকা থেকে সাগর কন্যা কুয়াকাটায় যেতে আপনার সময় থেকে শুরু করে কুয়াকাটায় উপভোগ্য স্পট সমূহ।
বিডি বাস লাভার গ্রুপ এর পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন সদস্য মিলে সিদ্ধান্ত নেন তারা সাগর কন্যা কুয়াকাটায় বেড়াতে যাবেন। উল্লেখ্য বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি সমুদ্র সৈকত হল কুয়াকাটা। বাংলাদেশে এটাই একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দুটোই দেখা যায়। পর্যটকদের কাছে কুয়াকাটা “সাগর কন্যা” হিসেবে পরিচিত। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। তারিখ নির্ধারণ করে গ্রুপের পক্ষ থেকে সাকুরার এসি বাস ভাড়া করা হল। নির্ধারিত তারিখে রাত ১০ টায় বাসে চড়ে সকলে রউনা দিলেন কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে।
ব্যক্তিগত ভাবে যদি যেতে চান তবে যেভাবে যাবেনঃ
ঢাকার গাবতলী এবং সায়েদাবাদ থেকে কুয়াকাটা এর উদ্দেশ্যে সকালে ও রাতে বাস ছেড়ে যায়। এছাড়াও ঢাকা থেকে লঞ্চে ও পটুয়াখালী/বরিশাল যেয়ে সেখান থেকে বাসে কুয়াকাটা যাওয়া যায়। বরিশাল থেকে কুয়াকাটার দূরত্ব ১০৮ কি.মি.
সাকুরা ও হানিফ এর গাড়ি ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে ৬০০-৭০০ টাকা।
সাকুরা গাবতলী কাউন্টার: 01198386013;
কলাপাড়া: 01198088211;
কুয়াকাটা: 01196157183
কোথায় থাকবেন: কুয়াকাটায় অনেক হোটেল আছে ।তবে আগে থেকে বুকিং করে গেলে ভাল।
পর্যটন হলিডে হোমস: কুয়াকাটা- ০৪৪২৮-৫৬০০৪, ১৭১-০১১৪৮৩
আপনি যদি একদিনের জন্য বা হাতে সময় কম নিয়ে যান তবে অবশ্যই রাতের ট্রিপে রউনা দেয়াই ভালো। ঢাকা থেকে কুয়াকাটা এর দূরত্ব ৩৮০ কি.মি। সাভার, নবীনগর,ধামরাই পার হয়ে বাস এগিয়ে যাবে পাটুরিয়ার উদ্দেশ্যে। অবশেষে বাস পাটুরিয়া দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে এসে থামবে। আপনাদের যদি ভিআইপি নেয়া থাকে তবে ট্রাফিক জ্যাম এড়িয়ে দ্রুত ফেরিতে উঠে যেতে পারবেন। বিডি বাস লাভার গ্রুপ অবশ্য ভিআইপি নিয়েই দ্রুত ফেরিতে উঠেন। ফেরিতে নদী পার হতে ১৫-২০ মিনিট লাগবে। তবে আপনাকে ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় যেতে হলে মোট ৫টি ফেরিতে করে বিভিন্ন নদী পার হতে হবে। যেসব যায়গায় আপনাকে ফেরি পার হতে হবে এগুলো হচ্ছে পাটুরিয়া, লেবুখালি, কলাপারা, মহিপুর ও আন্ধারমানিক।
আপনি রাতে রউনা দিলে কুয়াকাটায় পৌছবেন সকাল ৮ টা কি ৯ টার দিকে। তবে আগে থেকে সেখানে হোটেল বা রিসোর্ট বুক না দিলে বিডি বাস লাভার গ্রুপ এর মতই বিপদে পড়তে পারেন। কারণ তারাও সেখানে পৌঁছে কোন হোটেল পাননি।
বলে রাখা ভালো বিডি বাস লাভার গ্রুপ এর ভাষ্য মতে কুয়াকাটা সৈকতে আপনি ইচ্ছে করলে গোসল করতে পারেন কিন্তু সৈকত অত্যন্ত ময়লায় পরিপূর্ণ। যথাযথ কর্তৃপক্ষ সৈকতের আবর্জনা পরিষ্কারের উদ্যোগ নিলে হয়তো এই অনিন্দ্য সুন্দর প্রাকৃতিক সৈকত আরও অনেক বেশি সুন্দর লাগতো।
আপনি অবশ্যই খেয়াল করে কুয়াকাটা সৈকতে বেড়াতে এলে সাথে বাড়তি কাপর নিয়ে যাবেন। কারণ পানিতে নামলে বা সৈকতে শরীর ভেজাতে হলে আপনার বাড়তি কাপর লাগবে। সাথে না নিলে সেখানে ইচ্ছে করলেও হয়তো পানিতে শরীর ভেজানর শখ মেটাতে পারবেন না।
এবার চলুন জেনে নেয়া যাক কুয়াকাটায় আপনি সৈকত ছাড়াও আর কি কি দর্শনীয় জিনিস দেখে চোখ জুড়িয়ে নিতে পারবেনঃ
লাল কাঁকরার বিচ, বৌদ্ধ মন্দির, কুয়াকাটার ঐতিহাসিক কুয়া, গঙ্গামতির জঙ্গল, রাখাইন পল্লী এসব যায়গায় গেলে আপনার মন অবশ্যই প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্যে ভরে উঠবে। এছাড়াও আপনি যেতে পারেন ফাতরার বন, কটকা বিচে। তবে এসব যায়গায় যেতে হলে আপনাকে আলাদা বোটে করে যেতে হবে। সৈকত থেকেই এসব বোট ছাড়ে।
আপনার কুয়াকাটায় খাওয়া নিয়ে ভাবতে হবেনা, সেখানে অসংখ্য হোটেল রয়েছে, যেখানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করে থাকে। এছাড়াও খাওয়া দাওয়া সেরে আপনি কেনাকাটা করতে পারেন। সৈকত থেকে কিছুটা দূরে গেলেই আপনি মার্কেট দেখতে পাবেন। সাগর কেন্দ্রিক নানান জিনিস সেখানে বিকি-কিনি হয়। আপনি সেখান থেকে শামুক, ঝিনুক এবং রাখাইনদের তাঁতের তৈরী চাদর কিনতে পারবেন। এসব জিনিসের দামও বেশি না। এছাড়া কিনতে পারেন সাগরের বিভিন্ন মাছের শুঁটকি। শুঁটকির ভর্তা তো আজকাল সবাই খান। তো ঢাকায় ফেরার আগে সাথে নিয়ে নিতে পারেন কিছু শুঁটকি। কক্স বাজার থেকে এখানে শুঁটকির দাম কম।
এভাবেই দিন ফুরিয়ে আসবে, পাখির নীড়ে ফেরার সময় হয়ে যাবে, অগত্যা প্রকৃতির আহ্বান পেছনে ফেলে ফেরার বাসে উঠতে হবে আপনাকে। আপনি যদি সন্ধ্যা ৬ টার বাসে ঢাকায় ফিরতে চান তবে ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন সকাল ৫ টা থেকে ৬ টায়।
সম্পূর্ণ ভ্রমণের বিষয়ে তথ্য দিয়েছেনঃ sadikz.blogspot