দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইরাকে গোষ্ঠীগত সংঘাত অতীতের সকল রেকর্ড ছেড়ে গেছে। মূলত ইরাকে শিয়া-সুন্নি বিরোধের জের ধরে গত কয়েক মাসে দেশটির আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নাজুক। আর ইরাকের ভেতরে সুন্নি উগ্রপন্থীদের সহায়তা দেয়ার পেছনে কাতার এবং সৌদি আরবকে সরাসরি দায়ী করলেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি।
শনিবার ফ্রান্স ২৪ কে দেয়া সাক্ষাৎকারে নুরি আল মালিকী অভিযোগ করে বলেন, “বর্তমানে ইরাকে সুন্নি বিদ্রোহীরা যে গোষ্ঠীগত সংঘাত চালাচ্ছে তা অতীতের সকল সময় থেকে অনেক বেশি। এতে মারা যাচ্ছে ইরাকের সাধারণ মানুষ। আমাদের পার্শ্ববর্তী দুটি দেশ যদি ইরাকের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাত তাহলে আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি হতোনা।”
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকী আরো বলেন, “মূলত ইরাকে সুন্নি বিদ্রোহীদের আর্থিক, মানসিক এবং রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে রিয়াদ এবং দোহা। ফলে ইরাকের পক্ষে এই সংঘাত সামাল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। সৌদিআরব এবং কাতার ইরাকের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ইরাকে আঞ্চলিক দাঙ্গাতে সহায়তা দিচ্ছে।
ইরাক সরকারের প্রধান নুরি আল মালিকী মনে করেন সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ এবং ইরাকের বর্তমান শিয়া প্রভাবিত সরকারের বিরুদ্ধে সুন্নি ধর্মাবলম্বীদের তীব্র অসন্তোষ ইরাকের আভ্যন্তরীণ দাঙ্গা এবং গোষ্ঠীগত সন্ত্রাস উস্কে দিচ্ছে। সৌদি আরব এবং কাতার সুন্নি সমর্থিত বলে তারা সুন্নিদের উস্কে দিচ্ছে। এতে সুন্নিরা ইরাকের বর্তমান শিয়া সরকারের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধে লিপ্ত হচ্ছে।
এর আগে বিভিন্ন সময় ইরাকের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নিয়ে ইরাকি সরকারের পক্ষ থেকে সৌদি আরব এবং কাতার সহ উপসাগরীয় কিছু দেশকে ইঙ্গিত করা হয়। তবে এবারই প্রথম ইরাকি সরকার প্রধান সরাসরি মিডিয়াকে বললেন ইরাকের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে এবং ইরাকের অভ্যন্তরে শিয়া সুন্নি গোষ্ঠীগত দাঙ্গা বাঁধাতে সচেষ্ট সৌদি আরব এবং কাতার।
চলমান সহিংসতার মধ্যেই আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচন। তবে সম্প্রতি প্রায় প্রতিদিন ইরাকে বিভিন্ন ভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিয়া-সুন্নি দাঙ্গা এর মূল কারণ। বিগত কয়েক বছরের মাঝে কেবল এই বছরেই ইরাকে এখন পর্যন্ত শিয়া সুন্নি হামলায় মারা গেছে প্রায় ১ হাজার ৮শ’ মানুষ।
তথ্যসুত্রঃ আলজাজিরা