ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথম চাঁদে অবতরণকারী ব্যক্তিত্ব যার একটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ মানবজাতিকে পৌঁছে দিয়েছিল চাঁদের উচ্চতায়। সেই মার্কিন নভোচারী নেইল আর্মস্ট্রং আর নেই। তিনি গতকাল ২৫ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ৮২তম জন্মদিন পালন করার ঠিক দুই দিন পর হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। জানা যায়, হৃদপিণ্ডের অস্ত্রোপচারের সেই ধকল আর তিনি সামাল দিয়ে উঠতে পারেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসার এ্যাপোলো ১১ মিশনের অধিনায়ক হিসাবে ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই চাঁদের বুকে প্রথম মানুষের পদচিহ্ন এঁকে দেন আর্মস্ট্রং। সঙ্গী এডইউন অলড্রিনের সঙ্গে প্রায় ৩ ঘণ্টা তিনি চাঁদে অবতরণ করেন। চাঁদে পা রাখার মুহূর্তকে তিনি বর্ণনা করেছেন মানুষের জন্য ‘একটি ছোট পদক্ষেপ’ কিন্তু মানবজাতির একটি ‘বিশাল অগ্রগতি’ হিসেবে। ওই অভিযানে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত মানুষ বনে যাওয়া নেইল আলডেন আর্মস্ট্রং ওহাইওতে ১৯৩০ সালের ৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। বাবার সঙ্গে ৬ বছর বয়সে বিমানে ওড়া আর্মস্ট্রং ১৬ বছর বয়সেই তা চালানো শিখে ফেলেন। গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পাওয়ার আগেই রপ্ত হয়ে যায় ‘ওড়ার’ কায়দা।
১৯৫০ এর দশকের শুরুতে কোরীয় যুদ্ধের সময় নৌবাহিনীর ফাইটার জেট চালিয়েছেন তিনি। ১৯৫২ সালে সামরিক বাহিনী ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়ায় মন দেন এবং ১৯৬২ সালে যোগ দেন মার্কিন মহাশূন্য কর্মসূচিতে। আর্মষ্ট্রংয়ের মহাকাশ অভিযানের শুরু ৩৫ বছর বয়সে। ১৯৬৬ সালের ১৬ মার্চ মহাশূন্যযান জেমিনি-৮ এ সেই অভিযানে তার সঙ্গী ছিলেন ডেভিড স্কট।
চন্দ্র অভিযানের পর বলতে গেলে নিভৃত জীবন কাটিয়েছেন তিনি। জনসম্মুখে এসেছেন কদাচিৎ। গত নভেম্বরে আরো তিনজন নভোচারীর সঙ্গে আর্মস্ট্রংকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
চন্দ্রবিজয়কে বলা হয় বিশং শতাব্দির সবচেয়ে বড় অর্জন। আর যার পায়ে ভর করে সে বিজয় এসেছিল সেই আর্মস্ট্রংয়ের সঙ্গে এই পৃথিবীতে জন্ম নেওয়া প্রতিটি শিশুর পরিচয় ঘটবে পাঠ্যবইয়ের পাতায়। জীবদ্দশায় তিনি এক সাক্ষাৎকারে আর্মস্ট্রং বলেছিলেন, ‘ আমার বিশ্বাস, প্রত্যেক মানুষের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক হৃদস্পন্দন বরাদ্দ থাকে। আমি এর একটিও নষ্ট করতে চাই না’।
ঢাকায় শুভেচ্ছা সফরে সদ্য পরলোকগত মার্কিন নভোচারী ও চন্দ্রে প্রথম মানব নীল আর্মষ্ট্রং (Neil Armstrong)। Photo courtesy: Bangladesh Old Photo Archives.