দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্থাপত্য হল ইমারত এবং কোন বাস্তব কাঠামো তৈরির শিল্প এবং বিজ্ঞান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সারাবিশ্বের স্থাপত্য শিল্পে অনেক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছে। তারই নমুনা হিসেবে পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো অদ্ভুত কিছু নির্মাণ।
হোউজঊ হোটেল শেরাটন, চীন
চীনের হোউজঊ শহরের শেরাটন হোটেল যা চীনের তাইহু লেকের তীরে অবস্থিত। এর স্থপতি মা ইয়াংসুং বলেন তিনি চেয়েছিলেন এর মাঝের বৃত্তাকার শুন্যস্থানটি দ্বারা স্থানীয় সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সাথে আধুনিকতার মেলবন্ধন করতে। ২৭ তলাবিশিষ্ট এই স্থাপনাটি নির্মাণে সময় লেগেছে প্রায় দুই বছর। এতি তাইহু লেকের উপর একটি ব্রীজকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে। গোলাকার ধাতব রিং শেপের উপর ভিত্তি করে এটি নির্মাণ করা হয়।
এক্সেল স্প্রিঞ্জার হেডকোয়ার্টার, জার্মানী
ইউরোপের সবচেয়ে বড় মাল্টিমিডিয়া ফার্ম হলো এক্সেল স্প্রিঞ্জার। তাদের নতুন এই হেডকোয়ার্টারের নকশা করেন স্থপতি বুরো ওলে সেছেরেন। তিনি বলেন এর কেন্দ্রস্থলের শুন্যগর্ভটি দ্বারা তিনি নাগরিক জীবনের প্রতিফলন করার চেষ্টা করেছেন। এর দুপাশের দুটি অক্ষ দ্বারা সাবেক পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানীর একতাবদ্ধতা বোঝানো হয়েছে। এর স্থপতি আরো বলেন এটি আমাদের ঐতিহাসিক সচেতনতার স্বচ্ছতা প্রদান করে।
অপাস অফিস টাওয়ার, আবুধাবী
অপাস অফিস টাওয়ারে দুটি কাঠামো নিহিত। ক্ষয় হয়ে যাওয়া একটি ঘনকের সাথে মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি স্বাধীন শূন্যস্থান। দেখে মনে হতে পারে আমিরাতের অনেক তাপমাত্রার কারণে ঘনকটি গলে গিয়েছে। দিনের আলোতে ঘনকটি ক্ষয়ে যাওয়া প্রতিফলন রাতের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এর আলাদা আলোক ঝলমলে নাটকীয় পরিবর্তন হয়ে থাকে।
প্রযুক্তি, বিনোদন এবং জ্ঞানকেন্দ্র, তাইপে
ডেনিশ স্থপতি জার্ক ইঙ্গেলস এর নকশা করেন। এর বিভিন্ন গর্ত মূলত এক একটি প্রবেশদ্বার। এছাড়াও এগুলো সিঁড়ির মতো করে দালানের নীচ একেবারে ছাদে চলে গিয়েছে। দর্শনার্থীরা ইচ্ছে করলে পায়ে হেঁটে উপরে উঠতে পারেন। দালানের ছাদে একটি পার্ক অবস্থিত, এছাড়াও ভিতরে রয়েছে সম্মেলন কেন্দ্র, হোটেল রুম, শপিংমল। ইঙ্গেলস একে বলেন প্রকৃতি আর যান্ত্রিকতার সংমিশ্রণ।
সিসিটিভি টাওয়ার, বেইজিং
স্থপতি রেম কুলহাস বলেন তিনি গগনচুম্বী দালান নির্মাণ করতে আগ্রহী নন। তাই তিনি মনের মাধুরী মিশিয়ে নির্মাণ করেছেন বেইজিং সিসিটিভি টাওয়ার। এটি একটি অদ্ভুত ধরণের জটিল নির্মাণ। যেখানে ভিন্ন ভিন্ন আকারের ছয়টি কাঠামো যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন কাঠামো আলাদা আলাদা যুক্ত হওয়ার কারণে এর মাঝখান বরাবর একটি শূন্যস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বেইজিং এর সিসিটিভি টাওয়ারটি ৪৪ তলাবিশিষ্ট।
গেইট অফ ইস্ট বিল্ডিং, চীন
এর ব্রিটিশ নির্মাতা বলেন তিনি পশ্চিমা বিশুদ্ধতার সাথে চায়নার সংস্কৃতির সম্মিলন করতে চেয়েছিলেন। এটি আধুনিক চীনের তাৎপর্য বহন করে। স্থানীয় লোকেরা একে বলেন দৈত্যাকার একজোড়া প্যান্ট। ৭৪তলা বিশিষ্ট এই দালানটি নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ৭৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
হামবুর্গ সাইন্স সেন্টার, জার্মানী
জার্মানির ম্যাগদেবুর্গার হারবারের পাশে অবস্থিত এই সাইন্স সেন্টার। ডাচ আর্কিটেকচার ফার্ম এটি নির্মাণ করেন। ১০টি বড় আকৃতির ব্লকের মাধ্যমে এটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে দেখলে মনে হয় একটি রিং। এর স্থপতি বলেন স্থাপত্যটির মাঝখানের দিকে তাকালে আপনার মনে হবে একটি বহুভুজ হারিয়ে গেছে।
আধুনিক এই স্থাপনাগুলো হতে পারে অদ্ভুত কিন্তু এর নির্মাণশৈলীতে রয়েছে বৈচিত্র্য যা আপনাকে সত্যি অবাক করে দিবে।
তথ্যসূত্রঃ সিএনএন