দেখে নিন বিশ্বের ভয়ংকর সব সাপ এবং তাদের বিভিন্ন ভয়ংকর তথ্য

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ সাপ হলো হাত-পা বিহীন একপ্রকার সরীসৃপ। উইকিপিডিয়া তথ্যমতে সারাবিশ্বে প্রায় ২৯০০ প্রজাতির সাপ রয়েছে। তারমধ্যে বেশিরভাগ সাপই কম বিষধর। আর কিছু কিছু রয়েছে তীব্র বিষধর। আজ আমরা আপনাদের জন্য বিভিন্ন সাপ এবং সাপ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরবো।


১. শঙ্খচূড় বা কিং কোবরা

বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর সাপ। এর একটি কামড়ের বিষে ২০ জন মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। সাধারণত মানুষ এড়িয়ে চলে কিন্তু মুখোমুখি হলে ছোবল দিতে উদ্ধত হয়। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় সকল বনাঞ্চলে একে দেখতে পাওয়া যায়। ভুমি সমতল থেকে প্রায় ৬ ফুট মাথা উচু করে সামনে চলতে পারে এবং ছোবল দিতে পারে। একে সাধারণভাবে বলা হয় সাপখাদক। এটি জীবন ধারণের জন্য অন্যান্য সাপ খেয়ে থাকে। শঙ্খচূড় সাপ দেখতে গোখরা সাপের মতো হলেও এটি গোখরা বা কেউটে সাপ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এই সাপটি ছোট আকৃতির অন্যান্য বিষধর সাপ খেয়ে থাকে। এই সাপের বিষ নিউরোটক্সিক যা স্নায়ুতন্ত্রে সরাসরি আঘাত করে। বাংলাদেশের সুন্দরবনে এই সাপ বেশি দেখতে পাওয়া যায়।

২. হলুদ অ্যানাকোন্ডা

Related Post

হলুদ অ্যানাকোন্ডাকে দক্ষিণ আমেরিকার জলাভূমি এবং ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্য দেখতে পাওয়া যায়। হলুদ অ্যানাকোন্ডা সবুজ অ্যানাকোন্ডার চেয়ে আকারে ছোট হয়ে থাকে। এটি সাধারণত ১৫ ফুট লম্বা হয়ে হয়ে থাকে। এর শক্তিশালী চোয়াল আর মাংসপেশী যেকোনো প্রাণীকে গিলে ফেলতে সাহায্য করে। একে পৃথিবীর অন্যতম মানুষখেকো বলা হয়।

৩. ডেথ অ্যাডার সাপ

ধাতুমল ও হলুদ রঙ যুক্ত একটি সাপ যা বালি আর পাথুরে অঞ্চলে বিশেষত মরুভূমিতে দেখতে পাওয়া যায়। অস্ট্রেলিয়ার পাথুরে মরুভূমিতে এটি বেশি দেখা যায়। এর কালো লেজে তৈরি শব্দ দ্বারা বিভিন্ন প্রাণীকে আকৃষ্ট করে এবং কাছাকাছি আসা মাত্রই বিষাক্ত ছোবল মেরে থাকে। একে বিশ্বের অন্যতম বিষাক্ত সাপ হিসেবে পরিগণিত করা হয়। এর বিষ নিউরোটক্সিক যার ফলে মৃত্যুর কারণ ৫০ শতাংশ।

৪. পাইথন সাপের খোলস থেকে বেরিয়ে আসা

ক্রান্তীয় বৃষ্টি অরণ্যে একটি সবুজ রঙের পাইথন সাপের বাচ্চা ডিমের খোলস থেকে বেরিয়ে আসছে। ঘটনার স্থানটি উত্তরাঞ্চলীয় অস্ট্রেলিয়ার নিউগিনিতে। পাইথন বা অজগর সাপ বিশ্বের অন্যতম বড় আকৃতির সাপ। এগুলো সাধারণত শিকারকে পেঁচিয়ে মেরে ফেলে। তারপর মাথার দিক থেকে আস্ত গিলে খেয়ে ফেলে। এর ডিমের খোলস বেশ চামড়া যুক্ত হয়ে থাকে এবং ডিম ফুটানোর পর মা সাপ তা পেঁচিয়ে ডিমের জন্য তাপ দেয়।

৫. সাপের জিহবা

কিছু সাপ শীতকালীন ঋতুতে পুরোটা সময় গর্তের ভেতর কাটায়। যার ফলে বছরের বাকিটা সময় তাকে খাদ্য অনুসন্ধানে কাটাতে হয়। খাদ্য খোঁজা আর কাছাকাছি কোন শত্রু রয়েছে কিনা তা বোঝার জন্য জিহবা ব্যবহার করে থাকে। এটি তাদের এমন একটি অঙ্গ যার দ্বারা তারা শ্রবণ ও ঘ্রাণ গ্রহণ করে থাকে। এমনকি পুরুষ সাপ স্ত্রী সাপের সান্নিধ্য এবং একই প্রজাতির কিনা তা নির্ণয় করতে জিহবা ব্যবহার করে।

৬. কালো মাম্বা

আফ্রিকার সবচেয়ে ভয়ানক বিষধর সাপ হলো কালো মাম্বা। আফ্রিকার বিস্তৃত অঞ্চল জুড়েই একে দেখতে পাওয়া যায়। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বিষধর সাপ। শত্রুর অবস্থান আশেপাশে বোঝা মাত্রই এরা মরণঘাতী দংশন করে। এই সাপের একটি এন্ডেমিক প্রজাতি হলো কিং কোবরা বা শঙ্খচূড়। কালো মাম্বা এর নাম হলেও এর গায়ের রঙ জলপাই সবুজ।

৭. মোজাম্বিক কোবরা

মোজাম্বিক কোবরা প্রায় আট ফুট বা ২.৪ মিটার দূরে বিষ নিক্ষেপ করতে পারে বলে এর অন্য নাম নিক্ষেপিত কোবরা। কোবরা সাপের মতোই এটি বিষধর সাপ। এর বিষ চোখে পড়লে অন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আফ্রিকান মাম্বা সাপের থেকে আত্মরক্ষার জন্য এই সাপ মাঝে মাঝে বিষ নিক্ষেপ করে।

৮. সাপুড়ে

বাবুরাম সাপুড়ে কোথা যাস বাপুরে, সাপুড়ে পেশা ভারতসহ এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার অনেক দেশে এখনো প্রচলিত। বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন অনুসারে বিশ্বের অনেক দেশে একে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরা সাপ ধরে ও সাপের খেলা দেখিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। গ্রামীণ ভাষায় এদেরকে বেদে বলা হয়। হস্তনৈপুণ্য এবং ক্ষিপ্রতার মাধ্যমে এরা সাপের বিভিন্ন কসরত দেখিয়ে থাকে।

তথ্যসূত্রঃ ন্যাশনালজিওগ্রাফিউইকিপিডিয়া

This post was last modified on এপ্রিল ৩, ২০১৪ 12:36 অপরাহ্ন

K. A. B Tohin

Recent Posts

আইফোনের গেম ইমুলেটর ডেলটা কেনো এতো জনপ্রিয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ডেলটা নামে আইফোনের একটি ইমুলেটর অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে।…

% দিন আগে

আরশাদ আদনান শাকিবকে নিয়ে আরও দুটি সিনেমা বানাচ্ছেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই চলচ্চিত্রের সুপারস্টার শাকিব খানকে নিয়ে আরও দু'টি নতুন সিনেমা…

% দিন আগে

এই ছবির মধ্যে কোথায় ভুল রয়েছে একবার বলুন তো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বুদ্ধি খেলা খেললে ব্রেন আর স্রাফ হয়। তাই এই ধরনের…

% দিন আগে

নওগাঁর ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১…

% দিন আগে

জিভ দেখেও কিন্তু রোগ চেনা যায়! কোন উপসর্গ দেখলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণ শরীরে পানির ঘাটতি হলেও জিভ সাদা হয়ে যায়। নিয়মিত…

% দিন আগে

বেড়ে ওঠার সময় শিশুকে দুধ খাওয়ার সঙ্গে রুটিনেও আনতে হবে বদল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার শিশু বেড়ে ওঠার সময় কেবলমাত্র দুধভাত ও শাকসব্জি খাওয়ানোই…

% দিন আগে