দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইচ্ছে থাকলে জগতও হাতের মুঠোয় আনা যায়। এমন ঢ়ুড় বাস্তবতাকে প্রমাণ করলেন এইচএসসি পরীক্ষার্থী রুমা। দুই কনুইয়ে কলম চেপে ধরে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে সে।
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় রুমার এই কীর্তিময় অর্থাৎ অসাধ্যকে সাধন করার কাহিনী প্রকাশিত হয়েছে। ওর পুরা নাম নুরজাহান আক্তার রুমা। নুরজাহান অর্থ জগতের আলো। আর সেটি প্রমাণও করেছেন নুরজাহান ওরয়ে রুমা।
ছোটবেলার ছোট্ট একটি দুর্ঘটনা তার জীবনের সবকিছু পাল্টে দিয়েছিল। কিন্তু নিয়তির কাছে রুমা হার মানেনি। ছোট বেলার ঘটনা। নানার বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে কনুই পর্যন্ত দুই হাত হারিয়ে তার জীবনের সব আলো প্রায় নিভেই গিয়েছিল। মনের জোর আর ইচ্ছা আজ তাকে দমাতে পারেনি। নিয়ে এসেছে এতদূর। প্রাইমারি থেকে শুরু করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় পেরিয়ে রুমা এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। রুমা সরকারি সফর আলী কলেজ থেকে এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
নুরজাহান আক্তার রুমা নারায়নগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের পাঁচগাঁও মাঝের চর গ্রামের নুরুল হক এবং মরিয়ম বেগমের মেয়ে। ছোটবেলায় পাঁচগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে তার দুটি হাত ভেঙে যায়। পরে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করলে ডাক্তাররা নিরুপায় হয়ে তার দু’হাতের কনুইয়ের নিচ থেকে কেটে ফেলেন। ফলে তার লেখাপড়া প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
কিন্তু নিয়তিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে লেখাপড়ায় অত্যন্ত মনোযোগী ও মেধাবী রুমা লেখাপড়া চালিয়ে যেতে থাকে। এক সময় সে কাটা দুই হাতে কলম চেপেই সুন্দরভাবে লিখতে শিখে ফেলে। আর এভাবেই রুমা প্রাইমারি পেরিয়ে এক সময় এসএসসি এবং কলেজে উঠে আসে। আড়াইহাজার সরকারি সফর আলী কলেজ থেকে এবার রুমা মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। নুরজাহান আক্তার রুমা প্রমাণ করেছে ইচ্ছা থাকলে মানুষের অসাধ্য বলে কিছু নেই। ইচ্ছা আর মনোবল মানুষকে অনেক কিছু সাধন করাতে পারে। রুমা তার এক জ¦লন্ত উদাহরণ।