দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর দুই শিক্ষার্থী সৈয়দ তাসনিমুল ইসলাম ও সৈয়দ ইরফান আলী মির্জা তৈরি করেছেন স্মার্ট ওয়াচ (SmartWatch)। দুই জনেই কুয়েট এর ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
বর্তমানে স্মার্টফোন তৈরিকারী কোম্পানি সমূহ নিজেদের প্রত্যেক ব্র্যান্ডের সাথেই আলাদা করে স্মার্টওয়াচ তৈরি করছে। এসব স্মার্টওয়াচ যেমন দামে বেশি তার চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। তবে এসব স্মার্টওয়াচ দামে বেশি অনেক ক্ষেত্রে ১৮ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়ে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে ৩ মাস আগে থেকেই সৈয়দ তাসনিমুল ইসলাম ও সৈয়দ ইরফান আলী মির্জা স্মার্টওয়াচ তৈরির কাজে হাত দেয়। তারা দেশের প্রথম স্মার্ট ওয়াচ তৈরির এই প্রকল্পে সুপারভাইজার হিসেবে পেয়েছেন নিজেদের বিভাগের লেকচারার সুমিত সাহাকে। এবং তাদের সকল কাজে উৎসাহ দিয়েছে বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
নিজেদের উদ্ভাবন নিয়ে দুই তরুণ বিজ্ঞানী বলেন, “আমরা প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম স্মার্টফোন বানাবো, পরে ঠিক কোন প্ল্যাটফর্ম এর জন্য বানাবো তা ঠিক করি। আমরা এন্ড্রয়েড এর সকল ডিভাইসের জন্য একটি স্মার্টঘড়ি তৈরি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এবং তিন মাসের মাঝেই আমরা স্মার্টঘড়ি তৈরি করেছি। আমাদের তৈরি এই স্মার্টঘড়ি সকল এন্ড্রয়েড ডিভাইসে কাজ করে।”
তারা আরও বলেন, “আমরা প্রথমে এন্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশান তৈরি করি, পরে ডিভাইসের হার্ডওয়্যার হিসেবে আমরা ব্যবহার করি ArduinoProMicro/Nano, BluetoothModule HC-05, OLED display, RTC(Real Time Clock ) module, 5 way Switch, vibrator motor ইত্যাদি। মূলত স্মার্টঘড়িটি স্মার্ট ফোনের সাথে সংযুক্ত হবে BluetoothModule এর সাহায্যে এবং এতে থাকা বিভিন্ন রিসিভার দিয়ে এটি প্রতিনিয়ত স্মার্টফোনের অ্যাপ এর সাথে সংযোগ রেখে ফোনে আসা কল এসএমএস রিফ্রেশ করবে। যখনই কোনও ফোন কল আসবে কিংবা নটিফিকেশান আসবে তাৎক্ষণিক স্মাটওয়াচের পর্দাতে তা দেখা যাবে।”
এছাড়াও স্মার্টওয়াচে থাকছে, ঘড়ি দিয়ে মোবাইলের রিং ভলিউম, মিউজিক এর ভলিউম কমানো কিংবা বাড়ানো, মিউজিক এর Track বদলানো যাবে। স্মার্ট ফোনগুলোর একটি জনপ্রিয় ও অতি প্রয়োজনীয় ফিচার হল তা দিয়ে GPS (Global Positioning System ) অর্থাৎ আপনার বর্তমান অবস্থান দেখা যায়।
এই স্মার্টওয়াচের খরচের বিষয়ে উদ্ভাবকরা বলেন, গড়িটির সব কিছু তৈরি করতে মোট খরচ হয়েছে প্রায় ৬ হাজার টাকা। আমরা এখন কোনও বিনিয়োগকারী কোম্পানির আগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছি। কেউ যদি আমাদের উদ্ভাবিত এই ঘড়ি বাণিজ্যিক ভাবে বানাতে চায় আমরা উৎপাদন শুরু করতে পারব।
সৈয়দ তাসনিমুল ইসলাম ও সৈয়দ ইরফান আলী মির্জা বাংলাদেশের প্রতিভার দুইজন নমুনা, সম্প্রতি আমাদের দেশেই তৈরি হয়েছে ড্রোন, নিঃশব্দে চলা উড়োজাহাজ, অন্ধদের জন্য বিশেষ চশমা সহ আরও অনেক প্রযুক্তি। অতএব, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, খুব বেশি দেরি নেই বাংলাদেশের আবিষ্কারকরা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি তৈরিতে এগিয়ে যাবে।