দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাভারের রানা প্লাজার ভবন ধ্বসের আজ প্রথম বর্ষপূর্তি। আজকের এই মর্মান্তিক দিনটি শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে। দিনটির স্মরণে লন্ডনে পোশাক উল্টে পরার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
২০১৩ সালের আজকের এই দিন ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজায় এক মর্মান্তিক ভবন ধ্বসের ঘটনায় বহু গার্মেন্টস শ্রমিক হতাহত হয়। সেই বিয়োগান্ত ঘটনার দিনটি পালনের জন্য শুধু বাংলাদেশ নয়, লন্ডনসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে আজ বৃহস্পতিবার এক ব্যতিক্রমী স্মারক কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্রেতা ও ভোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে এই দিনটিকে ‘ফ্যাশন বিপ্লব দিবস’ বা ‘ফ্যাশন রেভুলেশন ডে’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বের সচেতন নাগরিকরা। িএমনই একটি কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে লন্ডনে। নিজেদের পোশাক উল্টো পরে লেবেলের দিকে ভোক্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মাধ্যমে এই মর্মান্তিক দিনটিকে স্মরণ করা হবে।
লন্ডনের প্রধান শপিং এলাকায় অক্সফোর্ড স্ট্রিটে লন্ডন ফ্যাশন কলেজের শিক্ষার্থী ও ফ্যাশন তারকারা ফ্লাশমব হিসেবে আবির্ভূত হবেন বলে জানানো হয়েছে। একে বলা হচ্ছে, ‘ফ্যাশমব’। বিকেলে বাংলা টাউনের ব্রিকলেনেও সংগঠিত হচ্ছে আরেকটি ফ্লাশমব।
এখনও খুঁজে ফেরেন অনেকেই
রানা প্লাজার ভবন ধ্বসের পর নিহত হয় অনেক মানুষ। সে সময় বহু লাশ উদ্ধার হয়। অনেক লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। কারণ অনেক দিন পর লাশ উদ্ধারের ফলে চেনা যায়নি অনেককেই। এমন অবস্থায় নিহত পরিবারের সঙ্গে ডিএনএ টেস্ক করেও অনেক লাশ শনাক্ত করা হয়। কিন্তু এর মধ্যেও অনেকের খোঁজ আজও মেলেনি। এমনকি লাশও পাননি। আবার এমনও রয়েছে জীবিত বা মৃত কোন হদিস তো মেলেইনি। আবার কোন ক্ষতিপূরণও পাওয়া যায়নি তাদের। কারণ গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো ঢাকাতে এসে গার্মেন্টস এ চাকরি করেন। একমাত্র আইডি কার্ড ছাড়া তাদের আর কোন কাগজপত্র ছিল না। আর আইডি কার্ডতো মানুষের সাথেই থাকে। ঘটনার সময় অনেকের পরিবার তাই কোন ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি। আর তাই তাদের উদ্ধার হয়নি যেমন আবার কোন ক্ষতিপূরণও পাননি। এমন সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তারা এখনও খুঁজে ফিরছেন তাদের প্রিয়জনকে। বড়ই এক করুণ পরিণতি ঘটেছে বহু পরিবারে। সাভার ট্রাজেডির শুধু কালের স্বাক্ষী হয়ে আছেন অনেকেই।
নিহতদের স্মরণে ১১৩৮টি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন
সাভারে রানা প্লাজা ভবন ধ্বসের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নিহত শ্রমিকদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, উদ্ধার কর্মী এবং হতাহত শ্রমিকদের স্বজনরা।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নিহত শ্রমিকদের স্মরণে এ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। নিহতের সংখ্যা অনুযায়ী ১১৩৮টি মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়। এ সময় নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে রানা প্লাজা ও এর আশপাশের এলাকা।