দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সিলেট, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ইটনা ও নেত্রকোনার পাথরের কারবারিরা কৌশলে পাথর উত্তোলনে ব্যবহার করছেন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বোমা মেশিন! এক্ষেত্রে তাদের নতুন কৌশল হচ্ছে প্রশাসনের চোখে ধুলা দিয়ে ভাসমান অবস্থায় এই মেশিন আরও ব্যপক পরিসরে প্রয়োগ!
বোমা মেশিন মূলত পাথর উত্তোলনে শক্তিশালী যান্ত্রিক কৌশল, এটি পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। নদীর নিচের স্থর থেকে পাইপ বা সিলেন্ডারের মাধ্যমে মেশিনে টেনে পাথর, নুড়ি তুলা হয় এই যন্ত্র দিয়ে। এক্ষেত্রে নদীর তলদেশ থেকে মাটির অবস্থান সরে গিয়ে নদী ভাঙ্গন, ভূমি ক্ষয় সহ নানান পরিবেশ বিপর্যয় ঘটে। ২০১০ সালে পরিবেশবাদি সংগঠন বেলা উচ্চ আদালতে একটি মামলা করে, যার প্রেক্ষিতে সারা দেশে বোমা মেশিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আদালত। তবে আদালতের নির্দেশ না মেনেই পাথর ব্যবসায়ীরা ঐ অঞ্চল সমূহে বোমা মেশিন দিয়েই পাথর উত্তোলন অব্যাহত রাখে।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বোমা মেশিন ব্যবহারের দায়ে বিভিন্ন সময় মেশিন ধ্বংস করা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করে। ফলে সাময়িক বোমা মেশিনের ব্যবহার কিছুটা কমে এলেও, আবার নতুন করে এর প্রয়োগ দেখা দিয়েছে। তবে এবার নয়া কৌশলে!
সিলেট, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ইটনা ও নেত্রকোনায় পাথর উত্তোলনে নদীর বুকে দেখা যায় কিছু ফেরীর মতো দখতে যন্ত্র ভাসছে। ভালো ভাবে খেয়াল করলে দেখা যায় এসব ভাসমান প্ল্যাটফর্মে রয়েছে একাধিক বোমা মেশিন! সাথে রয়েছে বেশ কিছু কর্মী। এসব মেশিনকে নাম দেয়া হয়েছে ‘ভাসান্যা’ যার অর্থ যা ভেসে আছে। ‘ভাসান্যা’ সমূহ নদীতে ভেসে ভেসে এক এক স্থানে থেকে পাথর উত্তোলন করে থাকে।
চোরা পাথর ব্যবসায়ীরা ‘ভাসান্যা’ ব্যবহার করছেন কেবল প্রশাসনের হাত থেকে দূরে থাকতে। যখন প্রশাসনের লোক আসে অভিযানে তখন ‘ভাসান্যা’ থেকে বোমা মেশিন ফেলে দেয়া হয় নদীতে। তা ছাড়া ‘ভাসান্যা’ চালিয়ে চলে যায় দূরে প্রশাসনের হাতের নাগালের বাইরে।
‘ভাসান্যা’ দিয়ে কৌশলে বোমা মেশিন ব্যবহারের বিষয়ে স্থানীয় পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এধরণের কোনও অভিযোগ আমরা পাইনি। আমরা নিয়মিত বোমা মেশিন নষ্টের জন্য অভিযান চালিয়ে আসছি। গত ছয় মাসের অভিযানের বরাত দিয়ে তিনি জানান, গত বছরের অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ভোলাগঞ্জ ও জাফলংয়ে ৮৫টি বোমা মেশিন ধংস করা হয়েছে। এর মধ্যে অক্টোবর মাসেই ভোলাগঞ্জে ৩৫টি বোমা মেশিন ধংস করা হয়। যার অধিকাংশ চলছিল নানা কৌশলে।