দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডায় মৃত তিমি বিস্ফোরণ প্রকট আকার ধারণ করেছে। গতমাসে নিউফাউন্ডল্যান্ড পশ্চিমা উপকূলে নীলতিমির তিনটি মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। এই সকল মৃতদেহ পচনের পুর্বেই বিস্ফোরিত হচ্ছে।
কানাডার ট্রট নদীতে রয়েছে প্রায় ৬০০ নীল তিমি যাদের প্রায় অনেকগুলো ৮১ ফুট লম্বা। এদের একেকটির ওজন ৬০ টন। তাদের মৃতদেহ পানিতে ভেসে থাকে এবং পেটের ভেতরে থাকে মিথেন গ্যাস। বাইরের তাপ, চাপ কিংবা বজ্রপাতে তা বিস্ফোরিত হয়। এমিলি বাটলার, ট্রট নদীর তীরবর্তী শহরের পৌরসভার একজন ক্লার্ক। তিনি বলেন, আমি জানি না কিভাবে এই স্তন্যপায়ী পেটের ভেতর এই গ্যাস এবং তাপ থাকে। তারপর আবার সেটি কিভাবে বিস্ফোরিত হয়। জ্যাক লসন, কানাডার মেরিন ফিসারিজ ডিপার্টমেন্টের একজন গবেষক। তিনি এই বিষয়ে বলেন, সাধারণত পেটের ভেতরে থাকা এই গ্যাসের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। কিন্তু তিনি বেশি চিন্তিত যে এই পচনশীল প্রাণীটির বিস্ফোরণের শিকার না কেউ হয়।
তিনি আরো বলেন নীল তিমির বাইরের চামড়াটি মৃতের অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বেশ পাতলা হয়ে যায়। এই সময় কেউ যদি এই চামড়ার উপর দিয়ে হেটে যায় তবে চামড়া স্থিতিস্থাপকতা ছিঁড়ে এর পেটের ভেতরে ঢুকে যাবে। যার ফলাফল হবে বেশ ভয়ানক। কারণ পেটের ভেতরে থাকা গ্যাস আর তাপে আক্রান্ত ব্যক্তিটি খুব সহজেই পুড়ে যাবে এবং তাকে বের করে আনা যাবে না। এই সমস্যাটি ছাড়াও আরো যে বিষয়টি প্রকোট আকার ধারণ করছে তা হলো নীলতিমির মৃতদেহের দুর্গন্ধ। যা সামনের পর্যটনের সময়ে বেশ সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
জেনি পারসন হলেন ট্রট নদীর তীরবর্তী সীসাইড রেস্টুরেন্টের মালিক। তিনি বলেন, আমরা পর্যটকদের এখানে আসতে বলি বিশেষ করে নীলতিমি দেখার জন্য যেখানে অনেক রেস্টুরেন্ট রয়েছে সমুদ্র তীরের কাছাকাছি। পর্যটকরা তাদের রেস্টুরেন্ট থেকেই নীলতিমি দেখে থাকেন। কিন্তু আমরা চাই না তাদের মৃত নীলতিমি দেখাতে। কেননা এটি তেমন আকর্ষণীয় নয়। তিনটি নীলতিমির মধ্যে দ্বিতীয়টির মৃতদেহ বিস্ফোরিত হয়েছিল রকি হার্বারে যেখানে ট্রট টাউনের মেয়রের বাসভবন। তিনি বলেন, বিস্ফোরণের পর মৃততিমির দুর্গন্ধে বসবাস করা দুরহ হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, কানাডিয়ান সরকার বলেছে এই শহরের ১০০০ মানুষ এর সমস্যা দূরীকরণে ভুমিকা রাখা উচিত। অর্থাৎ এর অর্থ খরচ বহন করবে স্থানীয় বাসিন্দা। কিন্তু বাটলার বলছেন, এই সমস্যা দূর করতে অর্থ ব্যয় করবে ট্রট নদীতে মাছ ধরার জেলেরা।
কিন্তু স্থায়ী জেলেরা এর বিরোধিতা করছে তারা বলছে তারা এই ব্যয় বহন করতে বাধ্য নয়। কেননা তারা মাছ ধরার ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব পালন করছে। আর কর্তৃপক্ষ তাদের দায়িত্ব হিসেবে এই পরিষ্কারের কাজটি করবে। কারণ বিস্ফোরণের পরে ক্ষয়ক্ষতির সকল দায় দায়িত্ব গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। তারা আরো বলেন, নীলতিমিরা আসে সাগর থেকে ফলে এটি ফেডারেল কর্তৃপক্ষের দেখার বিষয়। কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রধান বাটলার মনে করেন এটি তাদের দেখার বিষয় নয়। যদিও এর সমস্যায় বেশি ভোগ করছে স্থানীয় অধিবাসীরা। গ্লোবাল নিউজের একটি রিপোর্টে বলা হয়, মৃততিমির এই বিস্ফোরণের গন্ধ সহ্য করার মতো নয়। বিশ্বব্যাপী নীলতিমি একটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।
তথ্যসূত্রঃ সিএনএন