দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পরিবেশ পরিবর্তিত হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। যার বড় কারণ অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণ। এতে অনেক ভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি, ভবিষ্যতেও হব। বরফ গলে নিন্মভূমি ডুবে যাওয়ার চিন্তায় আমরা কাতর। এমন অবস্থায় জানা গেল, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে খাদ্য শস্যেও। পুষ্টি গুণাগুণ কমে যাচ্ছে ফসলের। এতে মানুষ খুব বড় পুষ্টি সঙ্কটে পড়বে ভবিষ্যতে।
গবেষণাঃ কার্বন-ডাই-অক্সাইড প্রধান প্রধান শস্যের পুষ্টি গুনাগুণ কমিয়ে দিচ্ছে…
পরীক্ষাঃ
হার্ভার্ডের এনভায়রনমেন্ট হেলথ ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর স্যামুয়েল মায়ারসের নেতৃত্বে একদল গবেষক যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ায় কয়েকটি জমিতে শস্য এবং ডাল চাষ করে। এক দিকে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ রাখা হয় প্রতি দশ লক্ষে ৫৪৬ থেকে ৫৮৬। আগামী চার দশকের মধ্যে বাতাসে এই পরিমাণের কার্বন-ডাই-অক্সাইড থাকবে বলে আশা করছে বিজ্ঞানীরা। অন্যক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় প্রতি দশ লক্ষে ৪০০।
পর্যবেক্ষণঃ
বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করা জমিতে ফলানো শস্যের মধ্যে ধান ও গমে জিঙ্ক, আয়রণ এবং প্রোটিনের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কমে গেছে। সয়াবিন ও ডালে প্রোটিন অপরিবর্তিত থাকলেও জিঙ্ক ও আয়রণ কমে গেছে। উদাহরণস্বরূপ গমে জিঙ্ক কমেছে ৯.৩%, আয়রণ কমেছে ৫.১% এবং প্রোটিন কমেছে ৬.৩%।
ফলাফলঃ
পৃথিবীর একটি বিশাল জনগোষ্ঠী চাল, গম এবং বিভিন্ন ডাল জাতীয় শস্যের উপর নির্ভরশীল। ইতিমধ্যেই দুইশ কোটি মানুষ জিঙ্ক এবং আয়রণ সঙ্কটে ভুগছে। যার ফলে প্রতি বছর ৬ কোটি ৩০ লক্ষ বছর হারিয়ে যাচ্ছে জীবন থেকে- সোজা কথায়, আয়ু হ্রাস পাচ্ছে। খাদ্যের এইসব পুষ্টি গুণাগুণ কমে যাওয়ায় মানুষ খুব বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে। শুধু জিঙ্কের অভাবে উচ্চতা হ্রাস, ক্ষুধা কমে যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়া, ডায়রিয়া, বিলম্বিত যৌন পূর্ণতা, পুরুষত্বহীনতা, হাইপোগোনাডিজম(পুরুষদের জন্য) এবং চোখ ও ত্বকের ক্ষত সহ আরো অনেক সমস্যা হবে। আর আয়রণের অভাবে ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা এবং মাথা ব্যাথাসহ নানান রকম সমস্যা হবে।
এহেন সমস্যায় খুব শীঘ্রই যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গবেষকেরা ফসলে সার ও কৃত্রিম রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগের কথা বলেছেন। তবে পরিবেশের বিপর্যয় রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে পৃথিবী খুব বড় সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে।
সূত্রঃ citylab