দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিবিসির এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে আবারো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। উল্লেখ্য যে, তিন বছর আগে তৎকালীন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি.চিদাম্বরম সীমান্তে লিথাল বা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
কিন্তু তার এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তীব্র সমালোচনা করেন। তার ফলশ্রুতিতে বাহিনীর ভেতরেও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সাম্প্রতিক বিএসএফ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে আবার এই প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহারের কথা তোলা হলে তা তুমুল করতালির মাধ্যমে সমর্থন জানানো হয়। বিএসএফ এর ভাষ্যমতে সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার তুলে দেওয়ার ফলে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাকারবার বিপুল পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে। তার সাথে সাথে বেড়েছে মাদক এবং নারীপাচারের মতো জঘন্য সব অপরাধ। বিএসএফ এর প্রধান এই সম্পর্কে বলেন, সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা সীমান্তরক্ষীদের থেকে অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার ফলে তারা হয়ে পড়েছে দুর্বল একটি শক্তি। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর মতো তারাও যেন সীমান্ত রক্ষায় ভূমিকা পালন করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। উল্লেখ্য যে, বিএসএফ সেনাবাহিনীর কোন অংশ নয় ফলে তারা বাংলাদেশী বিজিবির মতো প্রশিক্ষিত নয়।
বিএসএফ এর অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি ডী দেশ্রাজ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ভারী পোশাক পড়া অবস্থায় দৌড়ে গিয়ে ধরা সম্ভব হয় না। তাই এই ক্ষেত্রে গুলি করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু তাদের থেকে অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার ফলে বর্তমানে এটি সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরো মনে করেন, ভারতের পশ্চিম সীমান্তের (পাকিস্তান) চেয়ে পুর্ব সীমান্ত (বাংলাদেশ) বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বিএসএফের বার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রাণঘাতী অস্ত্র কেড়ে নেওয়া থেকে শুরু করে সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশের তীব্র সমালোচনা করা হয়। বিএসএফের অন্যান্য কর্মকর্তারা তা তুমুল করতালির মাধ্যমে সমর্থন করেন। এর আগে এই বছরের শুরুর দিকে নরেন্দ্র মোদি তার এক রাজনৈতিক বক্তৃতায় বলেন, সীমান্তরক্ষীদের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে আর বাংলাদেশীদের অবাধে প্রবেশাধিকারের ফলে দেশের নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। এই আপস কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
বিবিসি এই প্রতিবেদন সম্পর্কে আরো বলেন, মোদি সরকার সীমান্ত রক্ষার এই দায়িত্বে কোন ধরনের আপস করবে বলে মনে হয় না। ফলে বিএসএফের কাছে আবার প্রাণঘাতী অস্ত্র ফিরে আসতে পারে বলে মনে হচ্ছে এবং এরফলে সীমান্তে হত্যার আশংকাও বৃদ্ধি পাবে।