দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতে মহিলাদের শ্লীলতাহানি থেকে নিজেদের সম্ভ্রম রক্ষার জন্য এবার অন্তর্বাসেই লুকানো থাকবে সুরক্ষা ব্যবস্থা। নারীদেহ স্পর্শ করা মাত্রই দুষ্কৃতিকারীর শরীরে খেলে যাবে মারাত্বক বৈদ্যুতিক শক। সম্প্রতি এমনই একটি আবিষ্কারের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে। ভারতে ক্রমবর্ধমান ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির বিপরীতে এটি একটি ভালো কার্যকর ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছে অনেকে।
২০১৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লির রাস্তায় চলন্ত বাসে এক তরুণীর গণধর্ষণ শিকার হয়। নরপিশাচদের দ্বারা ক্ষতবিক্ষত এই নারী মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে কিছুদিন পর মারা যান। তার এই মৃত্যু সারা ভারতে আন্দোলনে রুপ নেয়। সারা ভারত জুড়ে আন্দোলন সংগঠিত হয় ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন। এই মৃত্যু ঘটনাটি চণ্ডীগড়ের মেয়ে মনীষা মোহনকে ব্যথিত করে। মনীষা মোহন পেশায় একজন অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি তার শিক্ষাজীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে চিন্তা করেন এমন কিছু করতে যা নারীদের সুরক্ষিত করবে। মাথা খাটিয়ে বের করে ফেলেন এমনই এক ব্রা, যা ছুঁলেই সারা শরীরে বিদ্যুত্ তরঙ্গ খেলে যাবে দুষ্কৃতিকারীর। এমনকি ঝলসে যাবে তার দেহের বেশ কিছু অংশ।
এখন দেখা যাক মনীষার তৈরি এই অন্তর্বাসটি কিভাবে কাজ করে। এসআরএম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মণীষা আবিষ্কৃত অন্তর্বাসে রয়েছে দু’টি আলাদা স্তর। এর ভেতরের স্তরটি ব্যবহারকারীর শরীর বিদ্যুতের ছোঁয়া থেকে বাঁচাবে। আর বাইরের স্তরটি ব্যবহারকারীকে দুষ্কৃতিকারী থেকে রক্ষা করবে। এছাড়াও এই পোশাকের সঙ্গে যুক্ত থাকবে জিপিএস ও জিএমএস ব্যবস্থা। এর ফলে ব্যবহারকারী দুষ্কৃতিকারী দ্বারা বিপদে পড়লে এর সাহায্যে আত্মীয়-বন্ধুদের কাছে চটজলদি সাহায্য চাইতে পারবেন।
আগামী জুলাই মাসের ১ থেকে ২০ তারিখ ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাষ্ট্রপতি ভবনে শুরু হতে চলেছে উদ্ভাবনী প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনীতে অন্যান্য উদ্যোগী উদ্ভাবনীর সাথে প্রদর্শিত হবে মনীষার উদ্ভাবন। এই প্রদর্শনীতে মণীষার সঙ্গেই অংশগ্রহণ করতে চলেছেন বেশ কয়েকজন তরুণ শিল্পী, সাহিত্যিক ও আবিষ্কারক। তৃণমূল স্তরের প্রতিভাধরদের উৎসাহ দিতেই এই আয়োজন। ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে জানা গিয়েছে যে, উঠতি গবেষকদের আবিষ্কারগুলো পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করা হবে রাষ্ট্রপতি ভবনে। প্রদর্শনীর কয়েক দিন অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে নিজে দেখা করে উত্সাহ দেবেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি।
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি