দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছেলেরা নিজেদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে বেশ অমনোযোগী। এমনকি পরিষ্কার পরিছন্নতার ক্ষেত্রেও এরা মেয়েদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। ছেলেদের এই সকল স্বাস্থ্য অসচেতনতা আর অপরিছন্নতার বিষয়টিকে তারা নিজেরা অনেক সময় স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নেয়। কিন্তু এই সকল বিষয়াদি অন্যের চোখে দৃষ্টিকটু আর হীনকর মনে হতে পারে। তাই আজ আমরা দি ঢাকা টাইমসের পাঠকদের জন্য তুলে ধরবো ছেলেদের সে সকল বদঅভ্যাসের কথা।
ভালোভাবে দাঁতের যত্ন না নেওয়া
দন্ত বিশেষজ্ঞদের মতে ব্রাশ করার নিয়ম হলো সকালে ঘুম থেকে উঠে আর রাতের খাবারের পর। মেয়েরা দিনে ও রাতে ২ বার দাঁত ব্রাশ করার নিয়মটি ভালোভাবেই মেনে চলতে দেখা যায়। কিন্তু নানা জরিপে উঠে এসেছে যে, ছেলেরা এই ব্যাপারে বেশ উদাসীন। প্রায় ৭৫% পুরুষ রাতের বেলা দাঁত পরিষ্কারে আলসেমি করে থাকেন। এমনকি অনেক ছেলেই রয়েছেন সকালে দেরি করে ঘুম থেকে উঠে দাঁত না পরিষ্কার করেই ক্লাসের উদ্দেশ্যে রওনা হন। অপরিষ্কার মুখ দাঁত ও হার্টের সমস্যার কারণ হতে পারে। কেননা রাতের খাবারের পর দাঁত পরিষ্কার না করলে দাঁতের মধ্যে লেগে থাকা খাবারের মধ্যে ভাইরাল ইনফেকশন হয়। তাই ছেলেদের এই ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি।
নিয়মিত শরীরের চেকআপ না করানো
বাইরের দেশে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যকার্ড পাওয়া প্রতিটি ব্যক্তির নিয়মিত শরীরের চেকআপ করানো বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমাদের দেশে এই ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা নেই বলে, দেহের নিয়মিত চেকআপ করতে ছেলেদের বেশ উদাসীন দেখা যায়। জ্বর যদি ১ সপ্তাহের বেশিও থাকে তাহলে তারা ডাক্তারের কাছে যেতে অনীহা বোধ করে থাকেন। নিয়মিত চেকআপ করলে দেহে বড় কোনো রোগ থাকলে তা প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা সম্ভব ও নিরাময় সম্ভব। এছাড়া বেশিরভাগ ছেলেই নিজের ডাক্তারি নিজেরা করে থাকে। যেকোনো ধরনের অসুখে তারা ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে এনে খেয়ে ফেলে। এই ধরনের বিষয়গুলো পরিহার করা উচিত। এতে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
উন্মুক্ত পরিবেশে শরীরের বিভিন্ন স্থান চুলকানো
ছেলেদের আরও একটি খারাপ ও অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মধ্যে পড়ে যেকোনো স্থানে নিজের শরীরের যে কোনো অংশে চুলকানো। প্রায় সময়ে ছেলেদের দেখা যায় রাস্তায় দাঁড়ানো কিংবা কোন পাবলিক প্লেসে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকাতে থাকে। নারীদের চোখে এই বিষয়টি খুবই দৃষ্টিকটু মনে হয়। ঘেমে গেলে কিংবা শরীরের কোনো স্থানে ছত্রাকের আক্রমণ হলে চুলকানি বাড়ে। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা একান্ত প্রয়োজন। আপনার শরীরের নিয়মিত পরিষ্কার বা পরিছন্ন থাকলে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ ঘটবে না, শরীরও চুলকাবে না।
জনসমাগম স্থানে ধূমপান করা
ছেলেদের সব চাইতে অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসটি হলো ধূমপান। একজন ধূমপায়ী নিজের যতোটা ক্ষতি করছেন ঠিক ততোটাই ক্ষতি করছেন অন্য একজন অধূমপায়ীর। আমাদের দেশে জনসমাগম স্থানে ধূমপানের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই বলে ধূমপায়ীরা যখন তখন যেকোনো স্থানে ধূমপান করে থাকেন। ধূমপানের কারণে দেহে নানা রোগ বাসা বাধে, এমনকি মানসিক অনেক সমস্যায়ও পড়তে হয়। তাই ধূমপানের অভ্যাসটি ত্যাগ করাই শ্রেয়। আর ধূমপানের ফলে তার পাশের ব্যক্তিটির কোন বিরক্তির কারণ হচ্ছে কিনা সেদিকেও লক্ষ্য রাখা উচিত।
যখন তখন নাকে-মুখে আঙুল ঢোকানো
রাস্তা-ঘাটে চলাফেরার সময় অনেক পুরুষকেই এই অস্বাস্থ্যকর কাজটি করতে দেখা যায়। এই কাজটি দেখতে যতোটা বিশ্রী দেখায় ততোটাই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। হাত অপরিষ্কার থাকলে এই সামান্য বিষয়টি থেকেও হতে পারে মারাত্মক রোগ। তাই এই কাজটি থেকে বিরত থাকাই ভালো। আর ছেলেদের ক্ষেত্রে সতর্কতা এই যে, মেয়েদের সামনে এই কাজটি কখনোই করতে যাবেন না। এই বিষয়টি তারা চরমভাবে ঘৃণা করে।
মুখ ভর্তি করে খাবার খাওয়া
খাবার খাওয়ার সময় মুখ ভর্তি করে নিয়ে খাবার খাওয়া আপনার সামনের ব্যক্তিটির জন্য অনেক বেশি অস্বস্তিকর। এছাড়া এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক বেশি খারাপ। মুখ ভর্তি করে খাবার নিয়ে খেলে খাবার চিবানো কম হয় যা হজম হতে অনেক সমস্যা হয়। এমনকি এর থেকে পাকস্থলীর সমস্যাও দেখা দেয়। তাছাড়া মুখভর্তি খাবার নিয়ে কথা বলতে গেলে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এই বিষয়টি অন্যের সামনে আপনাকে হেয় করবে।