দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রবাদ আছে- জলদি ঘুমাতে যাও, জলদি ঘুম থেকে উঠো। এই নিয়মের মাঝেই সাফল্যের চাবিকাঠি এর অন্যথায় হলেই সর্বনাশ। এতদিন যাবত এমনটাই শুনে আসছি। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষনায় দেখা গেছে, বুদ্ধিমান মানুষেরা সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি রাত জাগে। এমনকি রাতে কাজ করলে তাদের সাফল্য বেশি আসে।
সচরাচর বুদ্ধিমান মানুষের নিয়ম ভাঙ্গার প্রবণতা বেশি। প্রচলিত নিয়ম পরিবর্তন করে নিজের নিয়ম চালু করাতেই তার বুদ্ধিমত্তার সার্থকতা। এছাড়া রাতের গোপন মহিমা তারা আবিষ্কার করতে পারে। তাইতো তারা রাত জাগে। সাইকোলজি টুডে তরুন আমেরিকানদের উপর এক জরিপ চালিয়ে দেখেছে, কম বুদ্ধিমত্তার তুলনায় বেশি বুদ্ধিমত্তার তরুণ-তরুণী ঘুমাতে যায় দেরি করে। ২০-এর কাছাকাছি বয়সের মানুষের কর্মদিবস আর ছুটির দিনে ঘুমানোর সময় তাদের আইকিউ অনুসারে ভিন্নতর।
কম বুদ্ধিমত্তা (IQ < ৭৫)
কর্মদিবস: রাত ১১.৪১ থেকে সকাল ৭.২০
ছুটির দিন: রাত ১২.৩৫ থেকে সকাল ১০.০৯
সাধারণ বুদ্ধিমত্তা (৯০< IQ < ১১০)
কর্মদিবস: রাত ১২.১০ থেকে সকাল ৭.৩২
ছুটির দিন: রাত ১.১৩ থেকে সকাল ১০.১৪
বেশি বুদ্ধিমত্তা (IQ > ১২৫)
কর্মদিবস: রাত ১২.২৯ থেকে সকাল ৭.৫২
ছুটির দিন: রাত ১.৪৪ থেকে সকাল ১১.০৭
তরুণ-তরুণী যাদের আইকিউ ৭৫ এর কম তারা কর্মদিবসে ঘুমাতে যায় রাত ১১:৩০টায় যেখানে আইকিউ ১২৫ এর উপরে ধারীরা ঘুমায় ১২:৩০টায়। অধিকাংশ মানুষ যখন ঘুমাতে যায় তখনি বুদ্ধিমান মানুষ তার চিন্তা-ভাবনা, পরিকল্পনা, দিনের লাভ-ক্ষতি, হিসাব-নিকাশ মেলানোর মোক্ষম সময় হিসেবে বেছে নেয়।
রাতজাগা মানুষের মাঝে কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য ধরা পড়ে। যা রাত জাগার সাথে সম্পর্কযুক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেমনঃ
কল্পনার প্রসারতাঃ
যার কল্পনার দৌড় যত বেশি তার চিন্তার প্রসারতা তত বেশি। বুদ্ধিমান মানুষেরা রাতকেই বেছে নেয় চিন্তা করার সঠিক সময় হিসেবে। নিরবতার মাঝে তাদের কল্পনা বাধাপ্রাপ্ত হয় না। এতে অনেক কার্যকর পথ নির্দেশ খুঁজে পায়। সাধারণ গন্ডি অতিক্রম করে নিজের মত করে চিন্তার মোক্ষম সময় রাত।
ব্যতিক্রমিঃ
প্রচলিত ধ্যান ধারণা অতিক্রম করে নতুন কিছু প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে রাত জাগা মানুষেরা। পরিবর্তনের আঙ্গিনায় নিজেকে এবং সমাজকে নিয়ে যেতে সে বদ্ধ পরিকর। তাই সবার চেয়ে ব্যতিক্রমি হয় এসব রাতজাগা মানুষেরা।
উদারমনাঃ
এসব মানুষেরা প্রশস্ত মনের অধিকারী। যার ফলে তারা অনেক উদারমনা হয়ে থাকে। চিন্তা চেতনার গভীরতা আর মানসিক শক্তি তাদেরকে যে রকম অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সহায়তা করে তার ফলেই তারা উদারমনা হন।
কর্মক্ষমঃ
এরা অনেক বেশি কর্মক্ষম হয়ে থাকেন। মনযোগ বেশি থাকার কারণে সাফল্যও ধরা দেয়। তবে তারা রাতের পাশাপাশি দিনের বেলায়ও একই রকম দক্ষতায় কাজ করে। অর্থাৎ রাত জাগার কারণে মানুষের চিন্তা ভাবনার পরিবর্তনের পাশাপাশি তাদের দক্ষতাও বৃদ্ধি পায়।
এই ফলাফলগুলো নিশ্চিতভাবে প্রচলিত ধ্যান-ধারণার বাইরে। তবে বস্তুনিষ্ঠ হওয়ায় বিশ্বাসযোগ্য। তাই রাতকে শুধুমাত্র ঘুমানোর সময় হিসেবে না দেখে নিজের মন মানসিকতা আর দক্ষতা বৃদ্ধির কাজে ব্যবহার করা যায়। এমনকি অনেক মনিষীরাও রাত জাগতেন।
সূত্রঃ elitedaily