দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সময় ঘনিয়ে আসছে হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয়া দুর্গোৎসব। দেশজুড়ে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। উৎসবরে আমেজে এগিয়ে চলেছে প্রতিমা তৈরির কাজ।
শান্তি, সাম্য এবং ভ্রাতৃত্বের অমর বাণী শোনাতে এক বছর পরে শারদ উৎসবে স্বর্গলোক হতে মর্তে আসছেন দুর্গতিনাশিনী মহামায়া ‘মা দুর্গা’। ভক্তদের ডাকে সাড়া দিয়ে দেবী মহামায়া আসছেন এই মর্তলোকে। ধর্মের গ্লানি আর অধর্ম রোধ, সাধুদের রক্ষা করতে, অসুরের বধ এবং ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিবছর দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা ভক্তদের মাঝে আবির্ভূত হন।
দেবী দুর্গা শরতের সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে পৃথিবীতে শান্তির বারতা নিয়ে আসেন। আর তাই দশভূজাকে বরণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন আয়োজকরা। আয়োজকদের সব আয়োজন সফল করতে নির্ঘুম এক সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। প্রতিমা শিল্পীদের সুনিপুণ তুলির মনোরম আঁচড়ে মাটি এবং খড়ের পুতুলি পরিণত হবে জগদ্ধাত্রী রূপে। এরপর বোধনের সময় ঢাকের বাদ্যের তালে তালে পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হবে ৫ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব।
ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, প্রায় ৫ হাজার বছর আগে পাঞ্জাবের হরপ্পা এবং সিন্ধুর মহেঞ্জোদারোতে দেবীর পূজা হতো। শ্রীকৃষ্ণ নিজেও এই পূজা করেছেন। পঞ্চদশ শতকে তৎকালীন শ্রীহট্টের (বর্তমানে সিলেট) রাজা গণেশ প্রথম মূর্তিতে দুর্গাপূজা করেন। ষোড়শ শতকে- রাজশাহী অঞ্চলের রাজা কংসনারায়ণ দুর্গাপূজা করেন। অষ্টাদশ শতকের নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দুর্গাপূজা করেন। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে দুর্গোৎসব ছিল রাজা, জমিদার, মহাজন, বিত্তবানদের। আর এই আনন্দের দর্শক ছিল সাধারণ হিন্দুরা। বিংশ শতাব্দিতে এসে দুর্গোৎসব সর্বজনীন রূপ পায়। ধীরে ধীরে সনাতন বাঙালি হিন্দুদের প্রধান উৎসবে পরিণত হয় এই দুর্গাপূজা।
প্রসঙ্গত, এ বছর শারদীয়া দুর্গাপূজার মহানবমী এবং বিজয়া দশমী একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বলেছে, প্রচলিত পঞ্জিকা মতে, দুর্গাপূজা শুরু হবে ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায়- দেবীর বোধনের মাধ্যমে। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী, ১ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ২ অক্টোবর মহাষ্টমী ও ৩ অক্টোবর একই দিনে মহানবমী এবং বিজয়া দশমী অনুষ্ঠিত হবে। ৩ অক্টোবরই বিকালে বিজয়া শোভাযাত্রা এবং সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গোৎসব।