দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সারাবিশ্বে ডায়েট চিনি হিসেবে আর্টিফিশিয়াল সুগারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা যায় যে, এই ডায়েট চিনি বা এনএএস-নন ক্যালরিফিক আর্টিফিশিয়াল সুগার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। ইসরায়েলের গবেষকদের এই গবেষণাটি নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়।
সারাবিশ্বে অনেক চিকিৎসকই টাইপ ২ ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে কিংবা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে শরীরের স্থুলকায় ধারণ করছে এটি ঠেকাতে কৃত্রিম চিনি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়া সারাবিশ্বে জুড়ে ডায়াবেটিস সতর্কতা অনুসারে মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরির ক্ষেত্রে কেক ও পানীয় নির্মাতারা চিনির বদলে কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ইসরাইলের ভাইজম্যান হেলথ ইন্সটিটিউটের একদল গবেষক গবেষণার মাধ্যমে দেখতে পান যে, এই এনএএস বা কৃত্রিম চিনি মানুষের ডায়াবেটিস ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই গবেষণার প্রধান গবেষক ছিলেন এই ইন্সটিটিউটের গবেষক এরান এলিয়ানভ ও এরান সেগাল।
গবেষণাপত্রে বলা হয়, যে ডায়াবেটিসকে প্রতিরোধ করতে আমাদের এই কৃত্রিম চিনির ব্যবহার সেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিতে পারে এই কৃত্রিম চিনি। কেননা এই এনএএস চিনিগুলো আমাদের জিহবায় কৃত্রিম স্বাদ তৈরি করে কিন্তু এগুলো নন সলিউবল বলে তা জিহবায় না ভেঙ্গে সরাসরি অন্ত্রে চলে যায়। এতে করে পাকস্থলিতে থাকা পরিপাক ক্রিয়া সম্পাদনের জন্য গুট ব্যাকটেরিয়ার বিন্যাস এবং কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়। ফলে গ্লুকোজের ক্যাওস বেড়ে যায়। রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। গবেষকরা এই পরীক্ষাটি করার জন্য ৩৮১ মানুষের উপর জরিপ চালান তার পাশাপাশি ইদুরের উপর পরীক্ষামূলক পরীক্ষা করেন। ৩৮১ জন মানুষের নিয়মিত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। দেখা যায় যে, তারা বেশিমাত্রায় কৃত্রিম চিনি গ্রহণ করার কারণে গ্লুকোজ ক্যাওসের সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে। যা তাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এরপর গবেষকরা সাতজন বাছাইকৃত স্বেচ্ছাসেবকের উপর পরীক্ষা চালায়। তারা সাধারণ অবস্থায় কৃত্রিম চিনি গ্রহণ করে না এমন ব্যক্তিদেরই বাছাই করা হয়। তারপর তাদের নির্ধারিত মাত্রায় কৃত্রিম চিনি সাতদিন ধরে প্রয়োগ করা হয়। পাঁচদিনের মাথায় দেখা যায় যে, স্বেচ্ছাসেবকদের প্রত্যেকেই গ্লুকোজ ক্যাওসে আক্রান্ত। এরফলে গবেষকরা এই সিদ্ধান্ত নেন যে, কৃত্রিম চিনি মানুষের ডায়াবেটিসের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু এএফপির বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, কৃত্রিম চিনি বিরুদ্ধে এখনই সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না যদি না এই পরীক্ষা ব্যাপক আকারে করার মাধ্যমে একই ফলাফল পাওয়া যায়।