দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে অব্যাহত মৃত্যুদণ্ডাদেশে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মৃত্যৃদণ্ড বাতিল করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অবিলম্বে ফাঁসির ওপর স্থগিতাদেশ আরোপের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এই সংগঠনটি।
বাংলাদেশে অব্যাহত মৃত্যুদণ্ডাদেশ গভীর উদ্বেগজনক বিষয় হিসেবে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সেইসঙ্গে সংগঠনটি মৃত্যৃদণ্ড বাতিল করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অবিলম্বে ফাঁসির ওপর স্থগিতাদেশ আরোপের আহ্বান জানিয়েছে।
গত সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখার প্রেক্ষাপটে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই আহ্বান জানিয়েছে।
অ্যামনেস্টির বাংলাদেশ গবেষক আব্বাস ফয়েজ বলেছেন, ‘বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অব্যাহতভাবে আরোপ করা গভীর উদ্বেগজনক বিষয়। গত মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণার ৯ মাস বিরতির পর এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে ৩টি ফাঁসির আদেশ ঘোষিত হলো।’
অ্যামনেস্টি এও বলেছে যে, ‘বাংলাদেশকে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে, অবিলম্বে ফাঁসির ওপর স্থগিতাদেশ আরোপ করতে হবে। সেই সঙ্গে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে বিচার বিভাগের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হবে না।’
আব্বাস ফয়েজ আরও বলেছেন, ‘ফাঁসি স্বাধীনতা যুদ্ধের শিকার লাখ লাখ লোকের জন্য ন্যায়বিচার বয়ে আনার বদলে কেবলমাত্র সহিংসতার স্থায়ী চক্রই সৃষ্টি করবে।’
অ্যামনেস্টি বলেছে, ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাব্যুনাল আইসিটি যে ১২টি আদেশ দিয়েছে, তার সবই বিরোধী দলের সদস্যদের (প্রধানত জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্তদের) বিরুদ্ধে। এগুলোর মধ্যে ৯টি ছিল মৃত্যুদণ্ডাদেশ।
অ্যামনেস্টি আরও জানায়, ‘সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ রিভিউ আবেদন করতে পারে। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য রিভিউয়ের বিরুদ্ধে দেওয়ায় রিভিউ আবেদন করার অধিকার দৃশ্যত থাকছে না।’
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আরও উল্লেখ্ করেছে যে, ‘এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৪০টি দেশ মৃত্যুদণ্ড আইনগতভাবে বা প্রথা হিসেবে বাতিল করেছে। মাত্র যে ৯টি দেশ ২০০৯ হতে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ফাঁসি কার্যকর করেছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। অ্যামনেস্টি সবক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে।’
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বেও মানবতাবিরোধী অপরাধের রায়ের পর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।