দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আগামী বছর জুলাইয়ে নেপালের সঙ্গে সরাসরি বাস সার্ভিস চালু হচ্ছে। সরাসরি বাস সার্ভিস চালু হলে দুই দেশে যাতায়াত কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। ঢাকা-কাঠমাণ্ডু সরাসরি বাস সার্ভিস চালুর মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।
দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশ প্রস্তাব করে আসেছে ঢাকা-কাঠমাণ্ডু সরাসরি বাস সার্ভিস চালুর জন্য। এ বছর জুলাইয়ে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত নেপাল সিদ্ধান্ত না জানালেও নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসফি বিনতে সামস আশা করছেন যে, আগামী অর্থবছরের শুরুতে অর্থাৎ ২০১৫ সালের জুলাই হতেই দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বাস সার্ভিস চালু করা সম্ভব হবে।
কাঠমাণ্ডুতে নিজ বাসভবনে এক সাক্ষাৎকারে নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সংবাদ মাধ্যমকে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, সার্ক সনদ অনুযায়ী শীর্ষ সম্মেলনে দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ না থাকলেও সম্মেলন চলাকালে ২ দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার হতে পারে। প্রতিবেশী ২ দেশের মধ্যে পর্যটন, শিক্ষা এবং বাণিজ্য খাতের সুবিধার ক্ষেত্রে ঢাকা-কাঠমাণ্ডু সরাসরি বাস সার্ভিস সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দেবে- এমনটিই আশা প্রকাশ করেন নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রদূত মাসফি বিনতে সামস আরও বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের পাশাপাশি প্রাইভেট অপারেটররাও সরাসরি বাস সার্ভিস চালুর বিষয়ে চেষ্টা করছেন। সার্ক সম্মেলন শেষে এই বিষয়ে নেপাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আলোচনা চালাবে বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রদূত মাসফি বিনতে সামস আরও জানান, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন অফিস না থাকায় বাংলাদেশ-নেপাল যাতায়াতকারীদের বাধ্য হয়েই বুড়িমারি-চেংড়াছড়ি সীমান্ত পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। ফুলবাড়ী-বাংলাবান্ধা সীমান্ত ব্যবহার করা গেলে কাঠমাণ্ডু হতে ঢাকার দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার কমে আসবে। এতে ব্যয় ও সময় দুটিই সাশ্রয় হবে।
মাসফি বিনতে সামস জানান, প্রতিবছর বাংলাদেশ-নেপাল যাতায়াত ক্রমবর্ধমানভাবে বাড়ছে। গত বছর বাংলাদেশ হতে ২৬ হাজার পর্যটক নেপালে এসেছেন। আর নেপালের অধিকাংশ পর্যটন কেন্দ্র দেশটির পূর্বভাগে অবস্থিত। এ ক্ষেত্রে বুড়িমারি-চেংড়াছড়ি সীমান্ত পথে আসতে বাধ্য হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এসব পর্যটন কেন্দ্র দেখার সুযোগ হতে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক বাংলাদেশী পর্যটকরা।
রাষ্ট্রদূত মাসফি বিনতে সামস সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘নেপালের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী বর্তমানে বাংলাদেশে মেডিক্যাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যবসায় প্রশাসন (এমবিএ-বিবিএ) বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। এবছরও ৮৬২ জনকে বাংলাদেশে লেখাপড়া করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র ২৩ জন ভর্তি হবেন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে। বাকিরা পড়বেন প্রাইভেট মেডিক্যালে। প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে পড়তে একজন শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশে অন্তত ৫ বছর অবস্থান করতে হয়। আর ব্যয় করতে হয় ২ লাখ ডলারের বেশি। শিক্ষার্থীদের সূত্র ধরে তাদের মা-বাবা, আত্মীয়স্বজনরাও বাংলাদেশে যাতায়াত করে থাকেন। বাংলাদেশে লেখাপড়ার সুযোগ নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের মৈত্রী সম্পর্ক বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’ সরাসরি বাস সার্ভিস চালু হলে দুই দেশে যাতায়াত কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।