দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মূলা অনেকেই পছন্দ করেন না। কিন্তু এই মূলায় রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাছাড়া এই মূলার পুষ্টিগুণও রয়েছে বহু। আজ মূলার গুণাগুণ নিয়েই আলোচনা করা হবে।
আমরা দেখে থাকি অনেকেই মূলা দেখলেই নাক শিটকান। বলেন, এটি আবার খাবার জিনিস হলো নাকি! কিন্তু কখনও কি চিন্তা করেছেন এই মূলা কতটা উপকারী? তাহলে জেনে নিন, যে সবজিতে এতো অনীহা আপনার, সেই সবজিটিই কিন্তু হতে পারে অসংখ্য রোগের পথ্য। ভীষণ সহজলভ্য এবং দামে অত্যন্ত সস্তা এই সবজিতে রয়েছে বহু গুণাগুণ। এই সবজিটি আপনাকে রাখতে পারে সুস্থ-সুন্দর। নিরাময় করতে পারে আপনার অসংখ্য রোগ। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে এই সস্তা সবজিটিতে।
মূলার পুষ্টিগুণ:
প্রতি ১০০ গ্রাম মুলাতে প্রোটিন থাকে ০.৭ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ৩.৪ গ্রাম
ভিটামিন ‘এ’ ০.০ আইইউ
ফ্যাট ০.১ গ্রাম
আঁশ ০.৮ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ৫০ মিগ্রা
ফসফরাস ২২ মিগ্রা
লোহা ০.৪ মিগ্রা
পটাশিয়াম ১৩৮ মিগ্রা
ভিটামিন ‘সি’ ১৫ মিগ্রা মূলাতে পাওয়া যায়।
আমাদের দেশে সাদা এবং লাল দুই প্রকার মূলা পাওয়া যায়। মূলার চেয়ে মূলার পাতার গুণ আরও অনেক বেশি। কচি মূলার পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায় । আবার এটি খেতেও খুব মজাদার। পাতাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ ও সি পাওয়া যায়।
খাবার উপযোগী ১’শ গ্রাম মূলা পাতায় থাকে:
আমিষ ১.৭ গ্রাম
শ্বেতসার ২.৫ গ্রাম
চর্বি ১.০০ গ্রাম
খনিজ লবণ ০.৫৭ গ্রাম
ভিটামিন সি ১৪৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ বা ক্যারোটিন ৯ হাজার ৭শ মাইক্রোম
ভিটামিন বি-১০.০০৪ মিলিগ্রাম
বি-২০.১০ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ৩০ মিলিগ্রাম
লৌহ ৩.৬ মিলিগ্রাম
খাদ্য শক্তি ৪০ মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম ১২০ মিলিগ্রাম।
মূলার স্বাস্থ্যগুণাগুণ:
# ভাত খাওয়ার সময় কাঁচা মূলা খেলে দ্রুত হজম হয় এবং রুচি বাড়ে। কচি মূলার সালাদ ক্ষুধা বৃদ্ধি বিশেষ সহায়ক।
# যারা জ্বরে ভুগছেন এবং মুখে রুচি নেই- তারা মূলা কুচি কুচি করে কেটে চিবিয়ে খেলে উপকার পাবেন। এতে জ্বর কমবে, মুখের রুচিও বাড়বে।
# পাইলসে মূলা অত্যন্ত উপকারী একটি জিনিস। নিয়মিত মূলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং এর ফলে পাইলস রোগে আরাম হয়। যাদের পাইলসের কারণে রক্ত পড়ে তারা টানা দু’সপ্তাহ মূলা খেলে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
# মূলা ত্বক পরিচর্যায়ও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কারণ এটি অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। কাঁচা মূলার পাতলা টুকরা ত্বকে লাগিয়ে রাখলে ব্রণ নিরাময় হয়। আবার কাঁচা মূলা ফেস প্যাক ও ক্লিনজার হিসেবেও দারুন উপকারী।
# গুরুপাক খাবারের ফলে যাদের পেটে ব্যথা এবং গ্যাস জমা হয়ে থাকে তারা মূলার রসের সঙ্গে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
# শ্বেত রোগের চিকিৎসায় মূলা অত্যন্ত ফলদায়ক। এন্টি কারসেনোজিনিক উপাদানসমৃদ্ধ মূলার বীজ আদার রস ও ভিনেগারে ভিজিয়ে আক্রান্ত জায়গায় লাগালে অথবা কাঁচা মূলা চিবিয়ে খেলেও উপকার হবে।
# রক্ত পরিষ্কারক হিসেবে মূলা কাজ করে। সেই সঙ্গে লিভার ও পাকস্থলীর সমস্ত দুষণ এবং বর্জ্য পরিস্কার করে থাকে এই সস্তা দামের মূলা। মূলা কিডনি রোগসহ মূত্রনালির অন্যান্য রোগেও বিশেষ উপকারী।
# যেসব মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, তারা নিয়মিত মূলা খেলে বুকের দুধ বাড়ে।
তাহলে এই সিজনালী মূলা কেনো আমরা খাদ্য তালিকায় রাখবো না? আমরা প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় কিছু পরিমাণ মূলা রাখি। তাতে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বড়ই উপকার হবে।