দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনি মন্ত্রীকে হত্যার পর সারা বিশ্ব জুড়ে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা। এদিকে জানা গেছে ফিলিস্তিনি মন্ত্রীকে হত্যা করা হয় গলা টিপে।
ফিলিস্তিনি মন্ত্রী জিয়াদ আবু ইনের নিহত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে যখন তুমুল সমালোচনা সে সময় এই ঘটনাটি অন্যদিকে মোড় নিতে যাচ্ছে। এই ঘটনায় ইসরায়েলি সেনাদের প্রতি আঙ্গুল তুলেছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি অভিযোগ করেছেন, তারা তার মন্ত্রীকে গলা টিপে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে। তিনি একে একটি ‘স্পষ্ট অপরাধ’ ও ‘বর্বরোচিত ঘটনা’ হিসেবেও উল্লেখ করেন।
ফিলিস্তিনি মন্ত্রীসভার সদস্য জিয়াদ আবু ইন (৫৫) গতকাল বুধবার পশ্চিমতীরে এক বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার সময় ইসরায়েলি সীমান্ত পুলিশের ছোঁড়া টিয়ার শেলের আঘাতে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে নিহত হন বলে প্রাথমিকভাবে খবরে বলা হয়েছিল। তবে ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ যে, ইসরায়েলের এক পুলিশ সদস্যই তাকে গলা টিপে হত্যা করেছে।
গতকাল বুধবার রাতে মন্ত্রীর নিহত হওয়ার খবর পাওয়ার পরই ফাতাহ মুভমেন্ট ও পিএলও নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। বৈঠকে তিনি একটি ছবি তুলে ধরেন যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, আবু ইনের গলা টিপে ধরে আছে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা।
এই ছবিটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দেয় ফিলিস্তিনিরা। ছবিটির নিচে ইংরেজিতে ট্যাগ করা ছিল ‘ICantBreathÕ’ শব্দগুলো যার অর্থ দাড়ায় ‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’। ছবিটির সঙ্গে নিউইয়র্কে শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার হাতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হওয়ার ঘটনার লিঙ্কও জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল বুধবার ৫৫ বছরের আবু ইন কয়েকজন ফিলিস্তিনি নেতা ও বিদেশি মানবাধিকার কর্মীদের নিয়ে ইহুদি বসতি স্থাপণের বিরুদ্ধে এক বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছিলেন। এই সময় প্রায় ৩০ জন ইসরায়েলি সেনা এবং পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্য করে টিয়ার গ্রাস নিক্ষেপ করে। এক বর্ডার পুলিশ এক হাত দিয়ে চেপে ধরেন ফিলিস্তিনি মন্ত্রীর গলা। যদিও আবু ইন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে ওই প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন।
ওই সংবাদে বলা হয়, এই ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ইন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। তার ডায়াবেটিকস এও ব্লাড প্রেসার ছিল বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
ওইদিন বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আবদুল্লাহ আবু রাহমান নামের এক ফিলিস্তিনি নাগরিকের বরাত দিয়ে আল জাজিরার খবরে আরও বলা হয়েছে, আবু ইন সজ্ঞা হারানোর আগে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা তাকে নিজের হেলমেট দিয়েও নাকি আঘাত করেছিলেন। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পরই আবু ইনের মৃত্যুর আসল কারণ বেরিয়ে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি ও জর্দানের বেশ কয়েকজন প্যাথলজিস্ট তার ময়নাতদন্তে অংশ নিচ্ছেন বলে খবরে নিশ্চিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনি মন্ত্রী জায়িদ আবু ইনের হত্যা ঘটনাকে কেন্দ্র ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলের মধ্যে আবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠছে পশ্চিম তীর ও তার আশপাশের এলাকা।