দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ আপনাদের জন্য রয়েছে দেড় কোটি টাকার মালিক এক ভিক্ষুকের কাহিনী! পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পাটনায় এমন এক ভিক্ষুকের সন্ধান পাওয়া গেছে যিনি দেড় কোটি টাকার মালিক।
রাস্তা বা অলিগলির মাথায় ভিক্ষা করেন এমন লোক সব সময় দেখা যায়। বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষতো ঘর থেকে বের হলেই ভিক্ষুকের দেখা পান। আর সামনে ভিক্ষুক পড়লে আরা যা পারি তাই দান করি- এটিই এক স্বাভাবিক নিয়ম। মানুষের প্রতি মমত্ববোধ আমাদের সব সময় থাকে। কিন্তু এবার এক এমনই ভিক্ষুকের সন্ধান পাওয়া গেলো যিনি দেড় কোটি টাকার মালিক!
আপনি যদি কখনও জানতে পারেন, যে ভিক্ষুককে আপনি প্রায়শই ভিক্ষা হিসেবে অর্থ দিচ্ছেন তিনি এক টাকা, দুই টাকা নয়- রিতিমতো দেড় কোটি টাকার মালিক! তাহলে আপনার চোখ মাথায় উঠবে এটিই স্বাভাবিক। এমনই এক পিলে চমকানো ঘটনা ঘটেছে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পাটনায়।
ভারতের পাটনার ওই ভিক্ষুক দেড় কোটি টাকার মালিক। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ব মোট ৪টি ব্যাংকে তার নামে ৬ লাখ টাকার বেশি জমা রয়েছে।
ওই কোটিপতি ভিক্ষুকের নাম পাপ্পু কুমার। এই ভিক্ষুক যে এতো ধনী তা বোঝায় যায়নি। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে সম্প্রতি পাটনা পুলিশ তাদের রেলস্টেশনকে ‘ভিক্ষুক মুক্ত’ করার জন্য এক অভিযান চালায়।
অভিযানের সময় পাপ্পু নামের ওই ভিক্ষুককে অন্যত্র চলে যেতে বলা হলেও তিনি যাননি। এরপর পাটনা পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে গেলে একে একে তার অর্থ সম্পদের খবরা-খবর বের হতে শুরু করে। পাপ্পু গত ৭ বছর ধরে প্রতিদিন পাটনা রেলস্টেশনে ভিক্ষা করতেন বলে পুলিশকে সে জানায়।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, পুলিশ যখন পাপ্পুর শরীরে তল্লাসি চালায় তখন তার শরীর হতে ৪টি ব্যাংকের এটিএম কার্ড বের হয়ে আসে। এই কার্ডের জের ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করলে জানা যায় যে, তার ব্যাংকে ৬ লক্ষাধিক টাকা রয়েছে। পুলিশের জেরায় পাপ্পু জানায়, ব্যক্তিজীবনে একজন প্রকৌশলী হতে চেয়েছিলেন কিন্তু তা হতে না পেরে তিনি স্বাধীন পেশা হিসেবে ভিক্ষাবৃত্তিকেই বেছে নেন।
সংবাদ মাধ্যমকে পাপ্পু বলেছে, ‘৫৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে আমি এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছিলাম এবং গণিতে আমি পেয়েছিলাম ৭২। আমার ইচ্ছে ছিল প্রকৌশলী হওয়ার- তারজন্য চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু ঠিক ওই সময়েই আমি একটি দুর্ঘটনার শিকার হই এবং আমার শরীরের একটি অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এরপর আমার অন্য কোনো উপায় ছিল না ভিক্ষা করা ছাড়া। কারণ আমার দুর্ঘটনার পর আমার পরিবার আমার ব্যয়ভার বহন করতে পারছিল না।’
পাপ্পু তার বাবার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকাসূত্রে ৩৬০ বর্গফুট ভূমি পান। তিনি ওই জমি বিক্রি করে আবাসন ব্যবসায় অর্থ খাটান। বর্তমানে ৩২ বছর বয়সী পাপ্পু সব মিলিয়ে দেড় কোটি টাকার মালিক। পাপ্পু অনেককেই অর্থ ধারও দিয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমকে।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ এই ভিক্ষাবৃত্তি ত্যাগ করে তাকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সেই কথা এই ধনী ভিক্ষুকের কানে সেটি ঢুকেছে কিনা তা কিছু না গেলে বোঝা যাবে না। কারণ এমন ধনি যে ব্যক্তি সে ভিক্ষা করতে করতে এক সময় তার নেশায় পরিণত হয়ে যায়। পাপ্পুর ক্ষেত্রেও যে এমনটি ঘটেছে সেটি মোটামুটিভাবে বলা যায়। তানাহলে এতো টাকার মালিকটি ভিক্ষা পেশায় এতোদিনও থাকার কথা?