দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের প্রয়াণের ১ বছর আজ। গতবছর আজকের এই দিন ১৭ জানুয়ারি মহানায়িকা সুচিত্রা সেন পরপারে চলে যান। বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ উপলক্ষে নানা কর্মসুচি নেওয়া হয়েছে।
বাংলা কবিতার এক চিরায়ত রূপ ছিলেন সুচিত্রা সেন। নায়িকার মতো বাংলা ছবির দর্শকের কাছে যিনি চিরদিনই রোমান্টিকতার প্রতীক তিনি হলেন সুচিত্রা সেন। এক বছর আগে মৃত্যু হয়েছে তার। অন্তরালে তিনি ছিলেন বহুবছর। তাকে কখনও বৃদ্ধা বা প্রবীণার রূপে দেখেনি কেও। তিনি যেনো ছিলেন এক যৌবনের চিরন্তন প্রতিমা। সুচিত্রা সেনের নাম উচ্চারিত হলেই চোখে ভাসে তার মোহিনি হাসি, সজল দৃষ্টি এবং রহস্যময় ভঙ্গিমা। তার চেয়েও প্রতিভাবান অভিনেত্রী বাংলা চলচ্চিত্রে বহু এসেছেন কিন্তু পর্দায় তার চেয়ে রহস্যময়ী এবং রোমান্টিক আর কেও ছিলেন না। তাকে কখনও মনে হয়নি সহজ সাধারণ মেয়েটি। বরং সর্বদাই তিনি ছিলেন অধরা নারীর এক প্রতীক।
পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের বাঙালি সমাজের সামাজিক বাস্তবতায় যতই অবাস্তব বা অসম্ভব মনে হোক না কেনো, সুচিত্রা সেন যখন সেই চরিত্রে পর্দায় আবির্ভূত হয়েছেন তখন দর্শকের তাকে মেনে নিতে কোনো দ্বিধা জাগেনি। কারণ সুচিত্রা সেন মানেই তো গতানুগতিক জীবনের বাইরে কোনো এক রহস্যময়ী অধরা নারী। তিনি মায়াবন বিহারিণী এবং স্বপনচারিণী ছিলেন।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘দেবদাস’, ‘কমললতা’, ‘দত্তা’,‘পথের দাবী’সহ বিভিন্ন চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক খ্যাতি পেয়েছেন সুচিত্রা সেন। রাজলক্ষ্মী চরিত্রে তাকে ছাড়া যেন কাওকে ভাবাই যায় না, তেমনি ভাবা যায় না বিজয়া চরিত্রে অন্য কাওকে।
সুচিত্রা সেন ১৯৭২ সালে পদ্মশ্রী খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৭৪ সালে তার অভিনীত হিন্দি ছায়াছবি ‘আঁধি’ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার আসরে সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়নও পান। আর তার বিপরীতে অভিনয়ের জন্য সঞ্জীব কুমার সেরা অভিনেতার পুরস্কার লাভ করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল পাবনা জেলায় তার জন্ম হয়। তার পারিবারিক নাম রমা।। বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মা ইন্দিরা দেবী। পাবনাতেই তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। কিন্তু ১৯৪৭ সালে ঢাকার অভিজাত পরিবারের সদস্য শিল্পপতি আদিনাথ সেনের পুত্র দিবানাথ সেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। আদিনাথ সেনের বাবা দীননাথ সেনের নামে পুরনো ঢাকায় এখনও একটি সড়ক রয়েছে।