দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৃত্যু কখন কিভাবে হাজির হবে তা কেও বলতে পারে না। ছোট-বড় বা ধনি-গরীব কোন কিছুতেই বাধ সাধে না মৃত্যু। দীর্ঘ সাত বছর পর আজ দেশে ফিরছেন কোকো তবে জীবিত নয়, লাশ হয়ে। নিয়তির এক পরিহাস।
মৃত্যু কখন কার কিভাবে হবে তা কেও বলতে পারে না। দুনিয়াতে সৃষ্টিকর্তা অনেক কিছুই মানুষের হাতে ছেড়ে দিয়ে থাকলেও জন্ম-মৃত্যু কখনও মানুষের নিয়ন্ত্রণে দেওয়া হয়নি। মৃত্যু নামক দানবটি কখন কার দরজায় হাজির হবে তাও কেও বলতে পারে না। অনেক মুমুর্ষু রোগি বেঁচে যাচ্ছেন আবার একজন সুস্থ্য মানুষও হঠাৎ করে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছেন। এক অঘোম নিয়তি সবার জীবনে লেখা থাকে। কিন্তু কেও তা জানেনা কখন কিভাবে সেটি ঘটবে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ক্ষেত্রেও এমনটিই ঘটেছে। অঘোম নিয়মকে পাশ কাটানোর ক্ষমতা কারও নেই। ২০০৮ সালের ১৯ জুলাই। দিনটি ছিল শনিবার, দুপুর ১টা ২৯ মিনিট। প্রিয়জনদের কাঁদিয়ে তৎকালীন জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে থাইল্যান্ডে চলে যান অসুস্থ আরাফাত রহমান কোকো। জরুরি অবস্থার সময় গ্রেফতার হন কোকো। ২০০৮ সালে তৎকালীন সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর চিকিৎসার জন্যই থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন। থাই এয়ারওয়েজের বিমানে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন আরাফাত রহমান কোকো। সেখান থেকে তিনি গিয়েছিলেন মালয়েশিয়ায়। মৃত্যু অবধি তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন।
মা বেগম খালেদা জিয়ার কোলে ছোট ছেলে কোকো পাশে ভাই তারেক রহমান দাঁড়িয়ে আছেন- ছবি সংগৃহীত
এরপর বহু সময় পার হয়েছে, একে একে কেটে গেছে সাত সাতটি বছর। নানা আইনী জটিলতা আর নিরাপত্তাহীনতার কারণে সুস্থ হয়ে মায়ের কাছে ফেরা হয়নি কোকোর। প্রিয় জন্মভূমি-প্রিয় মানুষদের ছেড়ে নির্বাসনেই থাকতে হয়েছে বিদেশ-বিভূইয়ে। অবশেষে আজ সেই প্রিয় মাটি, পরম প্রিয় মমতাময়ী মায়ের কোলো ফিরে আসার স্বপ্নপূরণ হচ্ছে কোকোর। তবে সেই ফিরে আসাটি এক অন্যরকমভাবে ফিরে আসা। জীবিত নয়, প্রিয় স্বদেশের মাটিতে তিনি ফিরছেন লাশ হয়ে, নীথর-নীরব দেহে।
শনিবার দুপুরে মালয়েশীয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো। আজ তার মরদেহ মালয়েশীয়া থেকে বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। জানাজা হবে এবং দাফন করা হবে। পরিসমাপ্তি ঘটবে একজন কোকোর জীবন কাহিনীর।